শেরপুরে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি

2 hours ago 1

শেরপুরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে জেলার চারটি পাহাড়ি নদ–নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা নদীতে পাহাড়ি ঢল না থাকায় বন্যার শঙ্কা থেকে স্বস্তি পেয়েছেন এলাকাবাসী।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার পানির তীব্র স্রোতে মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে পড়লে খৈলকুড়া বাজার এলাকার অন্তত ১০টি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন স্থাপনাও ভেসে গেছে। সবজি ও ধানের খেত ডুবে ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে মহারশির বাঁধ ভেঙে উপজেলা সদরে বাজারে পানি ঢোকে। এ সময় সাত-আটটি বাড়ি ভেঙে চলে যায়। এ ছাড়া সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে ধানশাইল ইউনিয়নের কাড়াগাঁও-ধানশাইল সড়কের উপর অন্তত হাঁটু পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

শেরপুরে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি

কাড়াগাঁও বটতলার হোসেন আলী, দুপুরিয়া গ্রামের শরিফুর রহমান, জামাল উদ্দিন, রহমত মিয়া বলেন, আমাদের ধান খেতের উপর কোমর সমান পানি হয়েছিল। আর এবারের ঢলের স্রোত ছিল অত্যন্ত বেশি, তাই ধানের চারা ভেসে গেছে। আবার বেশিরভাগই ভেঙে গেছে।

পূর্ব খৈলকুড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ঘর ভেসে গেছে ঢলের পানিতে। তিনি বলেন, অন্যের জমিতে কাজ করে খাই। প্রতিবছরই পাহাড়ি ঢলে এমন কইরা বাড়িঘর ভাসায়া নিয়া যায়। কোনো রকমে খাটটা আর শোকেসটা বের করছি। আর কিছুই বের করতে পারিনি।

গোমড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, আগাম জাতের শিম চাষ করেছি। প্রতিকেজি দুইশ টাকা দরে বিক্রি করে আসছি। পানি ওঠে এখন গাছের গোড়া পঁচে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।

একই গ্রামের অপর কৃষি উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন জানান, শীতের আগাম বিভিন্ন সবজি চাষ শুরু করেছিলাম। পানিতে সব ডুবে গেল।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৯৯ শতাংশ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলায় রোপা আমন আবাদের নিম্নাঞ্চলের কিছু খেত প্লাবিত হয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন জানান, পাহাড়ি ঢলে উপজেলার ১১৩ হেক্টর রোপা আমন আবাদ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হেক্টর সম্পূর্ণ ও ৬৩ হেক্টর আংশিক। তবে পানি দ্রুত সময়ের মধ্যে নেমে গেলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ও রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখিনুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভোগাই, চেল্লাখালি, মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মো. নাঈম ইসলাম/এএইচ/জিকেএস

Read Entire Article