শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যান সিটির বিরুদ্ধে রিয়ালের জয়
ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদ মানেই প্রত্যাবর্তনের এক জীবন্ত উদাহরণ। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম লেগে আবারও সেই ঐতিহ্যের ছাপ রাখলো স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ৩-২ গোলে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগের আগে অগ্রগামী অবস্থানে থাকছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
ইতিহাদে শুরু থেকেই নিজেদের খেলার ছন্দ খুঁজে পায় ম্যানচেস্টার সিটি। আক্রমণাত্মক ফুটবলের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ১৯তম মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। জোস্কো গার্দিওলের দুর্দান্ত চেস্ট পাস থেকে বল পেয়ে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে বল জালে পাঠান আর্লিং হল্যান্ড। তবে অফসাইড সন্দেহে গোলটি যাচাই করতে চার মিনিট সময় নেয় ভিএআর, শেষে স্বীকৃতি পেয়ে যায় হল্যান্ডের শট। প্রথমার্ধে বল দখল ও আক্রমণে সিটিরই আধিপত্য ছিল, যদিও মাদ্রিদ বেশ কয়েকটি সম্ভাবনাময় সুযোগ সৃষ্টি করেছিল।
বিরতির পর রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের চিরচেনা রূপে ফেরে। ৬০তম মিনিটে দানি সেবায়োসের অসাধারণ ফ্লোটেড পাস পেয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পে স্কোরলাইন সমান করেন। গোলটি বেশ নাটকীয় ছিল—একটি অপ্রত্যাশিত ভলিতে বল তার শিনে লেগে এমনভাবে জালে জড়ায়, যাতে সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার এডারসনের কিছুই করার ছিল না।
তবে ৮০তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় সিটি। ফিল ফোডেনের বুদ্ধিদীপ্ত মুভমেন্টে বাধা দিতে গিয়ে বক্সের মধ্যে তাকে ফাউল করেন সেবায়োস। পেনাল্টি থেকে ভুল করেননি হল্যান্ড, ঠান্ডা মাথায় কোর্তোয়াকে ভুল পথে পাঠিয়ে গোলটি করেন। ম্যাচ তখন মনে হচ্ছিল গার্দিওলার দলই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বে।
কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদকে তো কখনওই খেলা থেকে ছিটকে ফেলা যায় না! ৮৬তম মিনিটে এডারসনের ভুল পাস ধরে বল পেয়ে যান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তার নেওয়া শট ঠেকালেও ফিরতি বলে গোল করতে ভুল করেননি ব্রাহিম দিয়াজ।
যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচ ড্র হতে যাচ্ছে, ঠিক তখনই ৯২তম মিনিটে ঘটে সেই অবিশ্বাস্য মুহূর্ত। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ডানদিক দিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে এসে বলটি এডারসনের মাথার উপর দিয়ে তুলে দেন। যদিও সেটি সরাসরি জালে প্রবেশ করছিল না, ঠিক তখনই সামনে এগিয়ে আসা জুড বেলিংহাম নিখুঁত ট্যাপ-ইন করে রিয়াল মাদ্রিদকে জয় এনে দেন। পুরো স্টেডিয়াম স্তব্ধ, আর রিয়ালের খেলোয়াড়েরা উল্লাসে ফেটে পড়েন।
এই জয়ে রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার পথে বড় এক ধাপ এগিয়ে গেল। যদিও দ্বিতীয় লেগ এখনো বাকি, তবে নিজেদের মাঠে এই এক গোলের লিড তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার সিটি কীভাবে এই ধাক্কা সামাল দেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। আনচেলত্তির শিষ্যরা আরেকবার প্রমাণ করলো কেন তারা ইউরোপের রাজা।