শেষ সময়ে ঈদের কেনাকাটায় বিড়ম্বনা, মিলছে না সাইজ!

2 days ago 14

কেউ সময় বের করতে না পারায়, আবার কারও হাতে টাকা না থাকায় ঈদের কেনাকাটা সারতে পারেননি। শেষ সময়ে তারা কেনাকাটায় ছুটছেন মার্কেটে। তবে পছন্দের ড্রেস, জুতা কিনতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন তারা। সেটা হলো পছন্দের ড্রেস কিংবা জুতার সাইজ মেলানোর বিড়ম্বনা। বাধ্য হয়ে অনেকে পছন্দের জিনিস রেখে অন্যটা কিনছেন, কেউ কেউ ফিরছেন না কিনে।

শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ও সন্ধ্যার পর রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, সুবাস্তু নজর ভ্যালি শপিংমল, হল্যান্ড সেন্টার শপিং কমপ্লেক্স, কনফিগার বেপারি শপিংমলসহ নামি ব্র্যান্ডগুলোর আউটলেট ঘুরে ক্রেতাদের এমন বিড়ম্বনায় পড়তে দেখা যায়।

এ বছর ২৯টি রোজা হলে বাংলাদেশে ঈদ হবে সোমবার (৩১ মার্চ), আর ৩০টি পূর্ণ হলে ঈদে হবে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল)। অর্থাৎ, ঈদের মাত্র এক অথবা দুইদিন বাকি। এমন সময়ে কেনাকাটায় গিয়ে সাইজ মিলিয়ে জামা-কাপড় ও জুতা-স্যান্ডেল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।

যমুনা ফিউচার পার্কে বাটার বিশাল শোরুম। ঈদে কেনাকাটা করতে সবসময় এ শোরুমে অন্তত ৫০০ মানুষ থাকছেনই। ঈদ উপলক্ষে ছাড় দেওয়ায় ভিড় আরও বেড়েছে নামি ব্র্যান্ড বাটায়। ক্রেতাদের চাপ ও চাহিদা সামলাতে বিক্রয়কর্মীদের পাগল হওয়ার দশা। ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ, পছন্দের জুতা বা স্যান্ডেলের চাহিদা মিলছে না।

jagonews24

রাবেয়া আক্তার নামে একজন ক্রেতা পছন্দের একটি স্যান্ডেল এক পায়ে পরে বসে আছেন। আরেকটি স্যান্ডেল নিয়ে সাইজ মেলাতে গেছেন বিক্রয়কর্মী। তার আর আসার নাম নেই! প্রায় আধা ঘণ্টা পর যখন বিক্রয়কর্মী ফিরে জানালেন, ক্রেতা যে সাইজ চাইছেন, তা নেই; তখন অনেকটা ক্ষুব্ধ হয়ে না কিনেই বেরিয়ে গেলেন তিনি। তার চোখে-মুখে রাগ-ক্ষোভের সঙ্গে একরাশ হতাশা।

বের হওয়ার সময় রাবেয়া আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জাগো নিউজ। তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় ঘণ্টা বাটাতে এসেছি। মোটা চার জোড়া স্যান্ডেল পছন্দ করেছি। কোনোটাই আমার পায়ের সাইজে মিলছে না। আমার লাগবে ৩৭। সেটা তারা দিতে পারছেন না। এখন আর কিনবো। ঈদের পর দেখা যাক কী হয়!’

আরও পড়ুন

একই দৃশ্য দেখা গেলো রাজধানীর উত্তর বাড্ডার অ্যাপেক্স, বে এবং অরিয়ন সুজের শোরুমে। পছন্দের জুতার সাইজ না পেয়ে অনেকটা ক্ষুব্ধ বৃদ্ধ আকমল হোসেন। তার ছেলের সঙ্গে করে জুতা কিনতে এসেছেন অ্যাপেক্সে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে দুই-তিন জোড়া জুতা পছন্দ করেছেন। তার পায়ে প্রয়োজন ৪১ সাইজ। সেটা মিলছে না।

আকমল হোসেন রেগে একপর্যায়ে বিক্রয়কর্মীকে বলেই ফেলেন, ‘এটা নাই, ওটা নাই। তাহলে আপনাদের দোকানে আছেটা কী?’ ক্রেতার এমন রাগে অবশ্য নীরব বিক্রয়কর্মীরা। মুচকি হাসি দিয়ে বিক্রয়মকর্মী সাজ্জাদ জানালেন, ‘সরি, স্যার। ঈদের সময়ে বেশি বিক্রি হয়। কিছু সাইজের চাহিদা বেশি। সেগুলো শেষ।’

jagonews24

এ তো গেলো জুতা-স্যান্ডেলের সাইজ নিয়ে বিড়ম্বনা। যমুনা ফিউচার পার্কে আড়ংয়ের শো-রুমে গিয়ে দেখা গেলো সাইজ মেলানো নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড! শুধু সাইজ মেলানোর কাজে অন্তত অর্ধশতাধিক বিক্রয়কর্মীর ঘাম ছুটে যাচ্ছে। হ্যান্ডমাইক হাতে নিয়ে ক্রেতাদের পছন্দের সাইজ এনে দিচ্ছেন ঘোষণা। তবে শেষ সময়ে অধিকাংশ পোশাকের সাইজই মিলছে না।

শেফালী বেগম নামে এক মধ্যবয়সী এসেছেন মেয়েকে নিয়ে কেনাকাটা করতে। ১২-১৩টা ড্রেস পছন্দ করেছেন। তবে মেয়ের যে সাইজের পোশাক লাগবে, তা মিলছে না। অনেকটা হাঁপিয়ে ওঠায় সোফায় বসে আছেন ওই নারী। ড্রেস খুঁজছেন তার মেয়ে।

সাইজ মতো পোশাক কিনতে হাঁপিয়ে ওঠা নারী বলেন, ‘আগে কিনলে এ ঝামেলা পোহাতে হতো না। এখন যা দেখি, সেটারই সাইজ নেই। এ কোন জ্বালা!’

আড়ংয়ের বিক্রয়কর্মী সালমান বলেন, ‘আমাদের একটা ড্রেসের চার-পাঁচটা সাইজ থাকে। মাঝারি সাইজের যেগুলো, সেগুলোর সেল (বিক্রি) বেশি। দেখা যায়, ঈদের চার-পাঁচদিন আগেই সেগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে যারা দেরিতে এসেছেন, তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।’

এএএইচ/ইএ

Read Entire Article