বয়সের ভারে শরীর নুয়ে পড়েছেন। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেনন না। তারপরও বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে গ্রাম থেকে যশোর শহরে এসেছেন শতবর্ষী বৃদ্ধ আলহাজ মো. আছিরুদ্দীন। সমাবেশে এসে জানালেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমি ভোট দিতে পারি নাই। ভোটকেন্দ্রে গেলে শুনতাম আগেই ভোট হয়ে গেছে। অনেক বয়স হয়েছে, শেষবারের মতো বিএনপিকে ভোট দিতে চাই। বেগম খালেদা জিয়াকে আরেকবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।’
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে জেলা বিএনপি আয়োজিত এ মহাসমাবেশে যোগ দেন বিএনপির মহাসচিব ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সমাবেশে এসে নিজের আকাঙ্ক্ষার কথা জানান মনিরামপুর উপজেলার বাঙালিপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আছিরুদ্দীন।
তিনি বলেন, আমার বয়স একশ বছর। ব্রিটিশ শাসন দেখেছি, পাকিস্তান শাসন দেখেছি। প্রথম দিকে আমি মুসলীম লীগের রাজনীতি করতাম। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ভোটে দাঁড়িয়ে গ্রাম সরকার নির্বাচিত হই। এরপর থেকে আমি বিএনপির সমর্থক হিসেবে আছি। আওয়ামী লীগের আমলে ভোটের অধিকার হারিয়ে সবাই যখন হতাশ হয়ে পড়েছিল তখনো আমি বিশ্বাস করতাম, একদিন স্বৈরাচারের পতন হবে, বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসবে।
শতবর্ষী এ বৃদ্ধ বলেন, আমার ৯ সন্তান। তারা সবাই চাকরি কিংবা ব্যবসা করে নিজেরা প্রতিষ্ঠিত। সবাই আমার দেখভাল করে। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা তারা অপূর্ণ রাখেনি। তবে জীবনের শেষ ইচ্ছা, সামনের নির্বাচনে বিএনপিকে ভোট দেব। সবার ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করবে। লন্ডন থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আবারও এদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা-উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।