শেষের ধাক্কায় পতনেই শেয়ারবাজার

3 months ago 42

মূল্যসূচক তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে যাওয়ার পর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (২ জুন) ফের দরপতন হয়েছে। মূলত লেনদেনের শেষ দিকে মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে এ দরপতন হয়।

এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হয়। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে লেনদেনের শেষ দিকে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়ালে সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়। একই সঙ্গে বাজারে ক্রেতা সংকটও দেখা যায়। এতে লেনদেনের গতিও কমেছে।

এর আগে শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতন হলে গত সপ্তাহের বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নামে। একই সঙ্গে দেখা দেয় লেনদেন খরা। ডিএসইতে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটে। তবে বৃহস্পতিবার সূচক ও লেনদেন কিছুটা বাড়ে। অবশ্য লেনদেন তিনশো কোটি টাকার ঘরেই আটকে থাকে।

এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় ১০ মিনিটের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে যায। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। কিন্তু দুপুর ১২টার পর থেকে পরিস্থিতি বদলে যেতে থাকে।

একদিকে ক্রেতা সংকট অন্যদিকে বিক্রির চাপ বাড়ায় দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ দিকে এ প্রবণতা আরও বাড়ে। ফলে সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। একই সঙ্গে কমে লেনদেনের পরিমাণ।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৩৩ পয়েন্টে নেমে গেছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস ডিএসইতে চারশো কোটি টাকার কম লেনদেন হলো।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, ই-জেনারেশন, ওরিয়ন ইনফিউশন, গোল্ডেন সন, ফারইস্ট নিটিং, সেন্ট্রাল ফার্মা এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৫টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

এমএএস/এমকেআর/জিকেএস

Read Entire Article