ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগ ‘নেগেটিভ ইকুইটি’ অবস্থায় চলে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটির মূল্য এখন শূন্যের নিচে। ফলে শেয়ারগুলোর ভ্যালু জিরো হিসেবে বিবেচিত হবে। কাউকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।’
বুধবার (৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন গভর্নর। এসময় ডেপুটি গভর্নরসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন আমানতকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানান, ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারীরা শতভাগ টাকা তুলতে পারবেন। বড় অঙ্কের আমানতের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে উত্তোলনের সুযোগ থাকবে। এই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত শিগগিরই গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানানো হবে বলেও জানান তিনি। এসময় গভর্নর সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পরিমাণ অর্থ তোলার অনুরোধ করেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার ক্ষমতায় এলে ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া থেমে যেতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটা দেশের স্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্ত। সরকার পরিবর্তন হলেও জনগণের স্বার্থের এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
গভর্নর বলেন, শেয়ারের নেট অ্যাসেট ভ্যালুটি নেগেটিভ। আমাদের হিসাব অনুযায়ী নেট অ্যাসেট ভ্যালু প্রায় ৩৫০0 (কিছু ডেটায় ৪২০ উল্লেখ আছে)। অর্থাৎ শেয়ারের প্রতি ইউনিট ভ্যালু নেগেটিভ। উদাহরণস্বরূপ—১০ টাকার শেয়ার এখন নেগেটিভ ১০ টাকা। এই নেগেটিভ পরিমাণগুলো আমরা আদায় করার চেষ্টা করছি না; প্রত্যাশা করা হচ্ছে এগুলোকে জিরো করে দেওয়া হবে—অনেকে এটাকে ‘জিরো করা’ বলছেন।
অপারেশনাল পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর অপারেশন এক্সিট বা বন্ধ করা হবে না; ধাপে ধাপে একীভূতকরণ করা হবে। কিছু বিষয় সময়সাপেক্ষ—যেমন আইটি ইন্টিগ্রেশন, ম্যানপাওয়ার রি-অর্গানাইজেশন; তাদের টেকনোলজি ব্যাকবোন দুর্বল হলে তা সম্পূর্ণ বদলে দিতে হতে পারে। সাধারণত এ ধরনের মার্জার শেষ করতে দুই বছর পর্যন্ত সময় লাগে; এখানে পাঁচটি ব্যাংক থাকার কারণে আরও জটিলতা থাকতে পারে। তাই একদিনে বা এক-দুই মাসে সম্পন্ন হবে না, সময় লাগবে।
গভর্নর আরও বলেন, আইন অনুযায়ী নেট অ্যাসেট ভ্যালু ভিত্তিক ক্ষতিপূরণের বিধান আছে। কিন্তু নেগেটিভ নেট অ্যাসেট হলে ব্যাংকগুলোকে কীভাবে টাকা দেওয়া যাবে—তার বাস্তব সক্ষমতা সীমিত। আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমি কী করে এক পয়সাও দেব? অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অর্থব্যবস্থা সীমিত। তবে আমানতকারীদের তাৎক্ষণিক সুরক্ষার ব্যাপারে প্রচেষ্টা থাকবে এবং ডিপোজিটরদের ফান্ড অ্যাক্সেস দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। সম্ভব হলে এই মাসের শেষের দিকে এ বিষয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে।
ইএআর/এমএমকে/এএসএম

19 hours ago
6









English (US) ·