শেয়ারবাজারে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন

2 months ago 23

পতন থেকে বেরিয়ে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। টানা মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বাড়তে দেখা যাচ্ছে।

বুধবার (৯ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় ৭০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫০ পয়েন্টের ওপরে বেড়েছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখেয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখনো পর্যন্ত লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই মূল্যসূচক বাড়লো।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষে হয়।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও ছয়টি প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে। এ ছয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- রহিম টেক্সটাইল, ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স, সার্প ইন্ডাস্ট্রিজ, শাহজিবাজার পাওয়ার, ফ্যামেলি টেক্স এবং রিজেন্ট টেক্সটাইল।

এ ছয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এমনকি লেনদেনের বেশিরভাগ সময় দিনের সর্বোচ্চ দামে এ ছয় প্রতিষ্ঠানের বিপুল শেয়ারের ক্রয় আদেশ এলেও বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে।

এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দাপট দেখানোর দিনে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৮টির। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৪৪টির দাম কমেছে এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৫৯টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ১৭টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৭টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে ৬৯০ কোটি ৬২ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬০১ কোটি ৭৫ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ৫ নভেম্বরের পর ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হলো।

বছরের সর্বোচ্চ এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ১৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার। ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, লাভেলো আইসক্রিম, ওরিয়ন ইনফিউশন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং অগ্নি সিস্টেম।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

এমএএস/এমকেআর/জেআইএম

Read Entire Article