সব মানুষের কাছেই তার শৈশব আবেগমাখা ও স্মৃতিমধুর। জীবনের সেরা সময়। যে সময়কে মানুষ একান্ত নিজের কাছে রেখে দিতে চায়। একজন ফুটবলারের জীবনও তেমন।
ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাসে বড় হয়েছিলেন এনড্রিক। শৈশবে ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন, এরপর ১৭ বছর বয়সেও সেই ক্লাবেই রয়ে গেছেন। এর মধ্যে জমেছে কতশত স্মৃতি। সতীর্থদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন আনন্দ-কষ্ট।
অবশেষে যাওয়ার পালা। জীবনতরী তো এমনই। কোনো এক ঘাটে বেশিক্ষণ থাকার মতো নয়। নতুন অচেনা জায়গায় ফেলতে হয় নোঙ্গর। যে তরীর বেগ আর তীক্ষ্মতা যত বেশি, সে তরীর ক্ষেত্রে এটি আরও বড় সত্য। এনড্রিকের বেলায়ও ঠিক সেটাই হয়েছে।
ক্লাবে বেড়ে ওঠা এনড্রিক ভালো খেলতে খেলতে সুযোগ পেয়ে যান ব্রাজিলের জাতীয় দলেও। বিষ্ময়বালক খ্যাত এই তারকার দুর্দান্ত খেলা দেখে তাকে দলে নেওয়া আগ্রহ দেখায় স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। চুক্তি হয়ে গেছে আরও আগে। আগামী মৌসুম থেকেই রিয়ালে খেলবেন এনড্রিক।
গতকাল বৃহ্স্পতিবার নিজের শৈশবের পাইমেইরাস ক্লাবে শেষ ম্যাচটি খেলে ফেলেছেন এনড্রিক। এরপর গ্যালারিভর্তি শতশত দর্শক আর সমর্থকদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার পালা। ভক্তরা এনড্রিককে গান গেয়ে বিদায় জানালেন। আর এনড্রিক নিজের অবয়র আঁকা পতাকা দিয়ে সেই অমূল্য সুরকে জড়িয়ে নিলেন।
পালমেইরাসের জার্সিতে শেষ ম্যাচে ৬৯ মিনিট মাঠে ছিলেন এনড্রিক। কোপা লিভারটাডোরেস টুর্নামেন্টে পালমেইরাস আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলায় সান লরেঞ্জোর বিপক্ষে এই ম্যাচটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। সে কারণে ব্রাজিলিয়ান তরুণ ফুটবলারকে বিদায় জানানোর জন্য আগেভাগেই তুলে নেয় ক্লাবটি।
পাইমেইরাসের সঙ্গে খেলা শেষ করে ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে কোপা আমেরিকা খেলবেন এনড্রিক। লাতিন আমেরিকার এই টুর্নামেন্ট শেষ করেই স্পেন যাত্রা করবেন তিনি। আর চলতি মৌসুমে রিয়ালের শেষ ম্যাচ অর্থাৎ বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল শুধুমাত্র একজন ভক্ত হিসেবেই দেখবেন এনড্রিক।
সান লরেঞ্জোর মুখোমুখি হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে রয়টার্সকে এন্ড্রিক বলেন, ‘আমি আমার বিদায়ী খেলায় (পালমেইরাসের হয়ে) এতটাই মনোযোগী ছিলাম যে, আমি এটাও বুঝতে পারিনি (আমাকে ছাড়া রিয়ালের শেষ খেলা ছিল)।’
‘আমি অনেক খেলা দেখি, কিন্তু সবসময় লাইভ খেলা দেখি না। কারণ আমাদের সময়সূচীর কারণে এটি সম্ভব নয়। আমি উল্লাস করার চেয়ে দলকে অধ্যয়ন করে খেলা শেষ করি। আমি যখন (খেলা) দেখছি তখন প্রায়ই ফলাফল ইতিমধ্যেই জানি।’
এনড্রিক আরও বলেন, ‘আমরা যারা খেলেয়াড়, তাদের জন্য খেলা দেখাটা ভিন্ন জিনিস। কারণ, আমরা সব সময় প্রশিক্ষণ এবং ভ্রমণে থাকি। আমরা অন্যান্য জিনিসের দিকে নজর দিই। সেজন্য আমি কোনো ঝামেলা ছাড়াই খেলা দেখতে পছন্দ করি। যদিও এটি বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ খেলা হয়, তখন আমি লাইভ খেলা অনুসরণ করতে চাই, সেটা আমি একাই করি।’
এমএইচ/এএসএম