ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ে ফেলতে হবে : মামুন হাসান 

2 hours ago 7

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান বলেছেন, বাংলাদেশ এখন যে ষড়যন্ত্রের জালের মধ্যে আটকে গেছে, সে জাল ছিঁড়ে ফেলতে হবে।

মিরপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মিরপুর শেরেবাংলা স্কুল মাঠে মুক্তিযুদ্ধ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন বিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে টিম-১৩, সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, কাফরুল থানা যুবদলের সদস্য সচিব মো. হাফিজুল ইসলাম বাবু।

মামুন হাসান বলেন, ষড়যন্ত্রের সে জাল ছিঁড়তে হলে, কঠিন এবং কঠোর রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। আর এই রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য মানুষের সমষ্টিগত একটি সরকার দরকার। সে সরকার যদি আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হয়, তাহলে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষ তার পছন্দের দলের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে যেন ভোট দিতে পারে, এটিই হচ্ছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি কাজ। কোনো সরকারের পেছনে যদি জনগণ থাকে, দেশবাসী থাকে, তাহলে সে সরকারের পক্ষে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব এবং সেটি কার্যকর করা সম্ভব।

মামুন আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের খবর পাচ্ছি। নতুন দল নিয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই। তবে, রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে, প্রশাসনকে ব্যবহার করে কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে দেশবাসী মেনে নেবে না। রাজনৈতিক দল গঠন করতে হলে জনমত তৈরি করেন। কিন্তু আরেক দলকে কটাক্ষ করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করা হলে আমরা বসে থাকব না। কঠোরভাবে জবাব দেওয়া হবে।

মামুন হাসান বলেন, আমরা জানতাম স্বৈরাচার পতন হবে। কিন্তু কোন তারিখে হবে সেটা নিশ্চিত না। সেই বিশ্বাস থেকে দেশের মানুষের সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছে বিএনপি। স্বৈরাচার যেভাবে দেশ ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, সেই দেশকে মেরামত করতে হবে। দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফায় যা যা বলা হয়েছে, সেসবই বর্তমান সরকারের সংস্কার কমিশন রিপোর্ট আকারে জমা দিয়েছে। কিন্তু সরকার হিসেবে একটু এদিকে-ওদিকে বলার চেষ্টা করবেই। তবে মূল বিষয় আমাদের ৩১ দফার বাইরে নয়।

মিরপুর ‘শত্রুমুক্ত’ হওয়ার ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, মিরপুরে মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি মিরপুর মুক্তকরণ যুদ্ধ সংগঠিত হয় ও পরদিন ৩১ জানুয়ারি সকালে রাজধানীর ঢাকার মিরপুর এলাকা মুক্ত হয়। মিরপুরের যুদ্ধে জিয়াউল হক লোদী, লে. সেলিমসহ ৪১ জন সামরিক বাহিনীর সদস্য, শতাধিক পুলিশ এবং মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২০০১ সালে জানুয়ারির ৩১ তারিখ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মিরপুরে মুক্ত দিবস পালন করা হয়। 

মামুন হাসান বলেন, ঢাকার বাসিন্দারা তখন বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হলেও শহরের উপকণ্ঠে মিরপুর তখনো ‘স্বাধীন’ হয়নি। বিষয়টি তখন এরকম ছিল যে, মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই সেটিকে স্বাধীন বাংলাদেশে ‘এক টুকরো পাকিস্তান’ হিসেবে বর্ণনা করেন। সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ারও অনেক দিন পরে ঢাকার উপকণ্ঠে মিরপুর ‘শত্রুমুক্ত’ হয়েছিল তীব্র এক যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে। ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি পুরো বাংলাদেশে গণহত্যা সংক্রান্ত যে গবেষণা চালায়- তাতে এটা প্রতীয়মান হয় যে, পুরো দেশে প্রায় পাঁচ হাজার ছোট-বড় বধ্যভূমি রয়েছে। এর মধ্যে ৯২০টি বধ্যভূমিকে শনাক্ত করা গেছে পুরো দেশে। ঢাকায় শুধু মিরপুরে বধ্যভূমির সংখ্যা ২৩টি।

তিনি আরও বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সামঞ্জস্য রেখেই মিরপুরের উন্নয়ন হবে। মিরপুরের মানুষের সুখে দুঃখের সাথী হয়ে থাকতে চাই। আপনাদের সবার সহযোগিতা আর পরামর্শ নিয়ে আগামীর মিরপুরকে সাজাতে চাই। আপনারা সব সময় আমার পাশে থাকবেন। আমাকে পাশে রাখবেন। আমি আপনাদের সেবায় নিয়োজিত।

Read Entire Article