সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরীর সম্ভাবনা
লক্ষ্মীপুরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনে (বিসিক) গড়ে ওঠেনি আশানুরূপ শিল্প-কারখানা। বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পরও বিভিন্ন সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্লট বরাদ্দ নিলেও অর্ধেক প্রতিষ্ঠানই উৎপাদনে যেতে পারেনি। অথচ মেঘনাপাড়ের এ জনপদে সস্তা শ্রম, দেশের ২১ জেলার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যাপক কৃষিপণ্য উৎপাদন হয়। বিসিকে পরিকল্পিত উন্নয়ন হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে বদলে যাবে এ এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান, এমনটাই আশা স্থানীয়দের। এদিকে বিসিক এলাকায় গ্যাস-পানি সংকট, ভেতরের অংশে সড়ক খানাখন্দে ভরপুর, অপরিকল্পিত ড্রেনেজে ব্যবস্থা, লোডশেডিং, বাতিহীন ল্যাম্পপোস্ট ও নিরাপত্তা প্রাচীর না থাকা উদ্যোক্তাদের সমস্যার অন্যতম কারণ। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কার্যকর সুফল আসছে না বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর শহরে বাঞ্ছানগর এলাকায় ১৬ একর জমিতে ১৯৯৭ সালে শিল্পায়নের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধান ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। ২০০০ সাল থেকে প্লট বরাদ্দ হয়। এরমধ্যে তিন স্তরে ৫৪টি শিল্প ইউনিটের জন্য ৯৯টি প্লট বরাদ্
লক্ষ্মীপুরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনে (বিসিক) গড়ে ওঠেনি আশানুরূপ শিল্প-কারখানা। বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পরও বিভিন্ন সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্লট বরাদ্দ নিলেও অর্ধেক প্রতিষ্ঠানই উৎপাদনে যেতে পারেনি। অথচ মেঘনাপাড়ের এ জনপদে সস্তা শ্রম, দেশের ২১ জেলার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যাপক কৃষিপণ্য উৎপাদন হয়। বিসিকে পরিকল্পিত উন্নয়ন হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে বদলে যাবে এ এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান, এমনটাই আশা স্থানীয়দের।
এদিকে বিসিক এলাকায় গ্যাস-পানি সংকট, ভেতরের অংশে সড়ক খানাখন্দে ভরপুর, অপরিকল্পিত ড্রেনেজে ব্যবস্থা, লোডশেডিং, বাতিহীন ল্যাম্পপোস্ট ও নিরাপত্তা প্রাচীর না থাকা উদ্যোক্তাদের সমস্যার অন্যতম কারণ। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কার্যকর সুফল আসছে না বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর শহরে বাঞ্ছানগর এলাকায় ১৬ একর জমিতে ১৯৯৭ সালে শিল্পায়নের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধান ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। ২০০০ সাল থেকে প্লট বরাদ্দ হয়। এরমধ্যে তিন স্তরে ৫৪টি শিল্প ইউনিটের জন্য ৯৯টি প্লট বরাদ্দ হয়। বর্তমানে ৩০টি ইউনিট চালু রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে বিসিকের দিকে একটু এগুলেই দেখা যায় বেশ কয়েকটি বড় গর্তে পানি জমে আছে। ভেতরে রাস্তা, ড্রেনেজ সমস্যা প্রকট। সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত; মালামাল পরিবহনে ট্রাক-পিকআপ ভ্যানসহ যানবাহন চলছে হেলেদুলে। ধুলাবালিতে একাকার। ড্রেনে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে মশা-মাছির দাপট চলছে। বর্ষা এবং সামান্য বৃষ্টি হলে ভেতরে হাঁটু পানি জমে থাকে। ভেতরে ২০-২৫টি প্লট খালি রয়েছে। সেখানে আশপাশের লোকজন গরু-ছাগল চরায়। এছাড়া সীমানা প্রাচীর না থাকায় চুরি-ছিনতাইসহ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এখানে উল্লেখযোগ্য অয়েল মিল, বেকারি, চকলেট তৈরি, সয়াবিন প্রক্রিয়াকরণ, অটোরাইস মিল ও মবিল রিপ্যাকিং মিল রয়েছে।
পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার নারী শ্রমিক ফাতেমা বেগম জানান, বিসিকে তিনি প্রতিদিন হেঁটে আসেন। মাঝেমধ্যে রিকশা নিলেও ভেতরে আসতে চান না রিকশাচালক। একটু বৃষ্টি হলে হাঁটুপানি মাড়িয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তরুণ উদ্যোক্তা জানান, এখানে পরিবেশ অনুকূলে রয়েছে। তবে সহজে আশানুরূপ ব্যাংকঋণ পাওয়া যায় না। অনেক সময় শ্রমিকের বেতন দিতেও হিমশিম খেতে হয়। এ অবস্থায় লোকসানের কারণে ফ্যাক্টরি বন্ধ রেখেছেন।
গোপালগঞ্জের ট্রাকচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রতিদিন এখান থেকে বহু ট্রাকসহ পরিবহন দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। কিন্তু বিসিকের ভেতরের রাস্তাগুলো খুবই নাজুক। এ কারণে প্রায়ই যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। চালকরাও এখানে আসতে চায় না।
কোয়ালিটি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক এম এ রহিম বলেন, বিসিকে বিক্ষিপ্তভাবে নয়, সমন্বিত উন্নয়ন প্রয়োজন। কয়েক বছর ধরে রাস্তার কারণে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য চরম বেগ পেতে হচ্ছে। দুর্বল ড্রেনেজের কারণে পানি জমে মেশিন ও কাঁচামাল নষ্ট হয়। এছাড়া সহজ শর্তে ব্যাংকঋণ না পাওয়ায় উদ্যোক্তারা সময়মতো কল-ফ্যাক্টরি চালু করতে পারছে না বলে জানান তিনি।
সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল করিম। তিনি বলেন, আমাদের জনবলেও ঘাটতি। বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে সড়ক ও ড্রেনের কাজ শুরু করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সমস্যাগুলো সমাধান করতে আমরা কাজ করছি। অর্থনৈতিক সংকট, মালিকানা মামলাসহ বিভিন্ন কারণে কিছু প্লট খালি রয়েছে। তাদেরকেও তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।
এফএ/এএসএম
What's Your Reaction?