সংকটের মুখে সম্ভাবনায় দুগ্ধশিল্প

4 months ago 56

বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে দুগ্ধশিল্প। বাংলাদেশেও এ খাতটি ব্যাপক সম্ভাবনাময়। তবে এ শিল্পে সফলতা অর্জনে চ্যালেঞ্জও কম নয়। দেশে দুধের উৎপাদন বাড়লেও মাথাপিছু প্রাপ্যতা এখনো অনেক কম। নিশ্চিত হয়নি খামারিদের উৎপাদিত দুধের নায্যমূল্যও। এছাড়া বাজারে নিম্নমানের আমদানিকৃত গুঁড়ো দুধের আধিক্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দেশি উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি বৃহৎ কোম্পানিগুলোর আগ্রাসী বিনিয়োগের প্রভাব। খামারিদের দুধে ভ্যালুচেইন সমস্যা ও গো-খাদ্যের চড়া দামের মতো সংকটও ঘিরে আছে এ শিল্পের আষ্টেপৃষ্ঠে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে দিন দিনই তরল দুধের চেয়ে দুগ্ধজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। মানুষের তরল দুধ পানের অভ্যাস সেভাবে তৈরি হচ্ছে না। তারপরও যেটুকু বাড়তি চাহিদা তা মেটাতে দুধের উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। আর উৎপাদন বাড়াতে হলে এ শিল্পের সংকট মোকাবিলা করাও প্রয়োজন।

দুধের উৎপাদন বাড়ছে
সরকারি তথ্য বলছে, দেশে গত এক যুগে দুধের উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। তারপরও চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। মাথাপিছু দুধ পানও কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে কম। আবার দিন দিন বাড়ছে দুধের দাম।

মানুষের তরল দুধ পানের অভ্যাস সেভাবে তৈরি হচ্ছে না। তারপরও যেটুকু বাড়তি চাহিদা তা মেটাতে দুধের উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। আর উৎপাদন বাড়াতে হলে এ শিল্পের সংকট মোকাবিলা করাও প্রয়োজন

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০ লাখ ৭০ হাজার টন। পরের তিন অর্থবছরে তা বেড়ে ৭২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যায়। তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উৎপাদন এক লাফে ২০ লাখ মেট্রিক টন বেড়ে পৌঁছে যায় ৯২ লাখ মেট্রিক টনে। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দুধের উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৬৮ হাজার টন।

আরও পড়ুন

তবে রেকর্ড উৎপাদনেও দুধের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। কারণ, দেশে বছরে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টন দুধের চাহিদা রয়েছে। দেশের মানুষ এখন মাথাপিছু দৈনিক গড়ে ২২২ মিলিলিটার দুধ পান করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, একজন মানুষের দৈনিক গড়ে ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান করা উচিত। তবে বাংলাদেশের মানুষ তার চেয়ে কম দুধ পান করে।

সংকটের মুখে সম্ভাবনায় দুগ্ধশিল্প

পুষ্টিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও ডেইরি খাত সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, বাংলাদেশের মানুষ এখনো প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম দুধ পান করে। দুধের অপ্রাপ্যতা, আর্থসামাজিক নাজুক অবস্থা, দুধের চড়া দাম এবং নিয়মিত দুধ খাওয়ার অভ্যাস না থাকায় এ হার অনেক কম। দুধের উৎপাদন নিয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যের সঙ্গে একমত নন তারা। তাদের দাবি, দেশে দুধের উৎপাদন আরও কম। তবে একই সঙ্গে তারা এ-ও মনে করেন, ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ডিম, দুধ ও মাংসের মাথাপিছু প্রাপ্যতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

দুধের দামও বাড়ছে
দুধের উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দামও। ঢাকা শহরে যারা বাসাবাড়িতে গরুর দুধ কিনছেন তারা জানিয়েছেন, প্রতি লিটার দুধ এলাকাভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে তা ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এসব তরল দুধের দাম গত পাঁচ বছরে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা মালেক স্টোরের মালিক আব্দুল মালেক প্যাকেটজাত পাস্তুরিত দুধ ও ইউএইচটি দুধ বিক্রি করেন। তিনি জাগো নিউজকে জানান, দুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি খানিকটা কমেছে। তার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি লিটার প্যাকেটজাত পাস্তুরিত দুধ ৯০ টাকা এবং ইউএইচটি দুধ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের তথ্য বলছে, দেশে ২০১৮ সালে এক লিটার পাস্তুরিত তরল দুধের দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০-৭৫ টাকা। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, অন্যান্য পণ্যের তুলনায় দুধের দাম দ্রুত বাড়ছে।

দুধের উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দামও। ঢাকা শহরে যারা বাসাবাড়িতে গরুর দুধ কিনছেন তারা জানিয়েছেন, প্রতি লিটার দুধ এলাকাভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে তা ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এসব তরল দুধের দাম গত পাঁচ বছরে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে

ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, ‘একদিকে দুধের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মানুষ দুধ কম কিনছে।’

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এক লিটার দুধ উৎপাদনে যে ব্যয় হয়, তার ৭০ শতাংশই যায় পশুর খাদ্য কেনায়। এর বাইরে শ্রমমূল্য ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ও রয়েছে। সরকারের উচিত বিনা মূল্যে ঘাসের বীজ ও চিকিৎসা খরচসহ খামার পর্যায়ে প্রণোদনা দেওয়া।’

গো-খাদ্যই বড় সমস্যা
গো-খাদ্যের দাম নিয়ে জাগো নিউজের কথা হয় কয়েকজন খামারির সঙ্গে। তাদের ভাষ্য, মাত্র চার বছর আগেও গো-খাদ্যের দাম বর্তমান দামের চেয়ে প্রায় অর্ধেক ছিল। এখন মাসে মাসে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। এমনকি গো-খাদ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ায় অনেকে খামার গুটিয়ে নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের খামারি রুবেল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘খড় ও ঘাসের পাশাপাশি গরু-ছাগলকে ভুসি, চালের খুদ, ধানের কুঁড়া এবং বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি কৃত্রিম ফিড (দানাদার খাদ্য) খাওয়ানো হয়। গত তিন মাসে প্রতি কেজি গমের ভুসিতে ৬ টাকা, বুটের খোসায় ১০, চালের খুদে ৬ ও দানাদার ফিডে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।’

সংকটের মুখে সম্ভাবনায় দুগ্ধশিল্প

রুবেল হোসেন জানান, চার বছর আগের তুলনায় এখন ফিডের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়া তিন মাস আগে প্রতি কেজি গমের ভুসির দাম ৪৬ টাকা, বুটের খোসা ৫২, চালের খুদ ২৯ ও দানাদার ফিডের দাম ৪৯ টাকা ছিল। কিন্তু এখন প্রতি কেজি গমের ভুসি ৫২ টাকা, বুটের খোসা ৬২, চালের খুদ ৩৮ ও দানাদার ফিড ৫৫ টাকা হয়েছে।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হারুন অর রশীদ গরুর খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির একটি চিত্র তুলে ধরে জাগো নিউজকে বলেন, বছরখানেক আগেও ৩৭ কেজির এক বস্তা ভুসির দাম ছিল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন তা বেড়ে দুই হাজার টাকায় উঠেছে।

গাভির উৎপাদন ক্ষমতা কম
দেশে দুধের উৎপাদন কম হওয়ার পেছনে গাভির কম উৎপাদন ক্ষমতা একটি বড় কারণ। দেশে একটি গাভি গড়ে বছরের ৩০৫ দিনে দৈনিক ৮ থেকে ১০ লিটার দুধ দেয়। অথচ শীতপ্রধান দেশে একটি গাভির দৈনিক দুধ দেওয়ার পরিমাণ ২২ থেকে ৩০ লিটার পর্যন্ত।

তথ্য বলছে, ভালো মানের একটি গাভি দৈনিক গড়ে ৬২ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি গরু দৈনিক গড়ে ৫২ লিটার দুধ দেয়। বাংলাদেশের খামারগুলোতে প্রতিটি গরু দিনে ৫ থেকে ৬ লিটার দুধ দেয়। এর বাইরে যেসব গরু আছে, সেগুলো দৈনিক গড়ে ২-৩ লিটার দুধ দেয়।

দেশের গাভিগুলোর দুধ কম দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দেশের গাভিগুলো অনেক সময় মানসম্মত খাবার পায় না। এজন্য এগুলোর উৎপাদন ক্ষমতাও কম। দেশীয় ঘাসে প্রোটিনের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম। উন্নত ঘাসের জন্য বিকল্প চাষাবাদে অনেক খামারি আগ্রহী নন।

দেশে দুগ্ধবতী পশুর সংখ্যার অনুপাতে দুধ উৎপাদন অনেক কম বলে মনে করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) দুগ্ধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসে দুগ্ধবতী পশুর সংখ্যা আমাদের চেয়ে অনেক কম, মাত্র ১৬ লাখ। অথচ দুই দেশে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ একই। এর কারণ, আমাদের দেশীয় গাভি দিনে ১-২ লিটার দুধ দিলেও উন্নত জাতের গাভি দেয় ২০-৩০ লিটার। দেশে দুধ উৎপাদন বাড়াতে কম দুধ দেওয়া গাভি কমিয়ে বেশি দুধ দেওয়া গাভির সংখ্যা বাড়াতে হবে।’

খামারিদের ‘হোঁচট’ বাজারজাতকরণে
দুধের সঠিক বাজারজাতকরণ প্রতিবন্ধকতায় হোঁচট খাচ্ছেন খামারিরা। প্রান্তিক পর্যায়ে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত বা সংরক্ষণের অপর্যাপ্ত সুবিধা ও পণ্য বহুমুখীকরণের সক্ষমতা না থাকা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে খামারিদের। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পরিবহন সমস্যা। এসব কারণে অনেক সময় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রান্তিক খামারিরা।

সংকটের মুখে সম্ভাবনায় দুগ্ধশিল্প

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের বুড়ামপুর গ্রামের তন্ময় ডেইরি ফার্মের মালিক আমিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সামান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা উৎপাদন একটু বেশি হলেই দুধের দাম পাই না। একসময় বেশিরভাগ দুধই মিল্ক ভিটায় বিক্রি করতাম। কিন্তু তাদের চাহিদার চেয়ে আমাদের উৎপাদন বেশি, এ কারণে উৎপাদিত দুধ থেকে যায়। তখন আমাদের বাইরে বিক্রি করতে হয়।’

তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুধ বিক্রির বিকল্প নেই। এটি খামারিদের জন্য নিরাপদ।

‘করোনার সময় আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বিপদে পড়তে হয়। ন্যায্যমূল্য পাই না। গুঁড়ো দুধ আমদানির ক্ষেত্রেও সরকারকে কঠোর নজরদারি করতে হবে। অবাধে গুঁড়ো দুধ আসছে। এর ফলে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তরল দুধের বিকল্প ব্যবহার বাড়ছে দুগ্ধজাত পণ্যে’- যোগ করেন আমিরুল ইসলাম।

সিরাজগঞ্জের সাদুল্লাপুর বাজারে দুধ বিক্রি করতে আসা আবু হানিফ বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও প্রতি লিটার দুধ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ২৫ টাকা লিটারে বিক্রি করতে হচ্ছে। গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় কম দামে দুধ বিক্রি করে উৎপাদন খরচই উঠছে না।’

আরও পড়ুন

পাশের ইসলামপুর গ্রামের খামারি আবু হোসেন বলেন, ‘দুধ বিক্রির জন্য নির্ধারিত ক্রয়কেন্দ্র প্রয়োজন। এখানে তা নেই। এছাড়া স্থানীয় বাজারগুলো বৈকালিক হওয়ায় দুধের ক্রেতা কম। তাই খামারিরা দুধ নিয়ে বিপদে পড়েন। ক্রেতা না পেয়ে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। অনেক সময় দুধ রাস্তায় ফেলে দিয়ে যেতে হয়। অবিক্রিত নষ্ট দুধ বাড়িতে নিয়ে ফেলে দিতে হয় পুকুরে।’

দুগ্ধজাত পণ্য ও গুঁড়ো দুধের চাহিদা বাড়ছে
দেশে তরল দুধের পাশাপাশি বাড়ছে দুগ্ধজাত পণ্যের চাহিদা। বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক জরিপে দেখা গেছে, বয়স্কদের মধ্যে দুধ পানের অভ্যাস আছে। তবে অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের মধ্যে দুগ্ধজাত নানা পণ্য যেমন দই, মিষ্টি, লাবাং খাওয়ার প্রবণতা বেশি।

মিল্ক ভিটা প্রতিদিন খামারিদের কাছ থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার লিটার দুধ ব্যবহার হয় গুঁড়ো দুধ তৈরিতে। বাকি এক লাখ লিটারের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ হাজার লিটারে পাস্তুরিত তরল দুধ করা হয়। বাকিটা দিয়ে তৈরি হয় নানা পণ্য।

এক লিটার দুধ উৎপাদনে যে ব্যয় হয়, তার ৭০ শতাংশই যায় পশুর খাদ্য কেনায়। এর বাইরে শ্রমমূল্য ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ও রয়েছে। সরকারের উচিত বিনা মূল্যে ঘাসের বীজ ও চিকিৎসা খরচসহ খামার পর্যায়ে প্রণোদনা দেওয়া।- বিডিএফএ সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান

দুগ্ধশিল্প খাতে বড় বিনিয়োগ করেছে প্রাণ, ব্র্যাক, আকিজ, ইগলু, ফার্ম ফ্রেশ, আফতাব, আড়ংসহ বেশকিছু কোম্পানি। যদিও চাহিদার বড় অংশই পূরণ হয় আমদানি করা গুঁড়ো দুধ দিয়ে। দেশির চেয়ে বিদেশি গুঁড়ো দুধের বাজার তিনগুণ বড়। যেটি এ শিল্পের বিকাশে বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করা হয়।

সংকটের মুখে সম্ভাবনায় দুগ্ধশিল্প

সমস্যা সমাধানে করণীয় কী
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্কের মতো দেশগুলোতে গাভিপ্রতি দুধের উৎপাদন অনেক বেশি। দুগ্ধ খাতে সেসব দেশ প্রচুর ভর্তুকি দেয়। এ কারণে তারা কম দামে দুধ বিক্রি করতে পারে। বাংলাদেশে দুগ্ধশিল্পের বিকাশের জন্য গাভির উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এজন্য চাই ভালো জাতের গরু। একই সঙ্গে এ খাতকে সুরক্ষা দিতে সরকারের উদ্যোগও বিশেষভাবে প্রয়োজন।

ডেইরি খাতের সহায়তা এবং মানসম্মত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য তৈরিতে বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য গত বছর ‘বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড আইন ২০২৩’–এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ আইন কার্যকর করা হলে খামার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়বে। তখন খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা যাবে। তবে পরবর্তীকালে এ নিয়ে তেমন কোনো কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি। বোর্ডের কার্যক্রম দ্রুত চালুর তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি বোর্ডের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার বিষয়েও তারা তাগিদ দিয়েছেন।

এনএইচ/এমকেআর/এমএমএআর/এএসএম

Read Entire Article