সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস

3 months ago 44

সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়েছে। রোববার (৩০ জুন) স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে এ বাজেট কণ্ঠভোটে পাস হয়, যা কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে। এর আগে রাষ্ট্রপতির সম্মতিসাপেক্ষে নির্দিষ্টকরণ আইন গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে।

শনিবার বিকেলে সংসদে অর্থ বিল উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং পরে সেটি সংসদে পাস হয়।

এর আগে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপর বক্তব্য রাখেন। বাজেটের ওপর প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও অর্থমন্ত্রীসহ ২৩৬ এমপি বক্তব্য রাখেন। গত ১১ জুন থেকে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র এমপিরা।

বাজেটে ব্যক্তির সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ প্রস্তাব করা হলেও সংসদ তা গ্রহণ করেনি। এর পরিবর্তে সর্বোচ্চ কর বিদ্যমান ২৫ শতাংশই বহাল থাকছে। বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী করহারের ধাপে কিছুটা পরিবর্তন এনে সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিলেন।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এ বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলীর এটা প্রথম বাজেট।

মূল্যস্ফীতি কমিয়ে বড় প্রবৃদ্ধির আশাবাদ ব্যক্ত করে যে বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এছাড়া ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

এই ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

আর অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি, যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি ঋণ। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

এবার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরবহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।

বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে আবর্তক ব্যয় ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। আর দেশি-বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এবার মূলধন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা।

বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্কিমে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। এডিপিবহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (এডিপিবহির্ভূত) ও স্থানান্তরে ২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

আইএইচআর/বিএ/এমএস

Read Entire Article