সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ষোলো আনা বাস্তবায়ন নাও হতে পারে: সিইসি

7 hours ago 8

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ষোলো আনা বাস্তবায়ন নাও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম এম নাসির উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত পিঠা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, বিজ্ঞজনেরা সবদিক বিবেচনা করে সুপারিশ করেছেন। আমরা সুপারিশ পর্যালোচনা করার প্রতিক্রিয়া জানাবো। যারা রিপোর্ট বানিয়েছেন, তারা বিজ্ঞজন। ওনারা ভ্যালুয়েবল রিপোর্ট তৈরি করেছেন। অনেক কষ্ট করে রিপোর্ট করেছেন। কিন্তু সুপারিশ ষোলো আনা বাস্তবায়ন নাও হতে পারে। তবে ইসিকে শক্তিশালী করতে যতগুলো সুপারিশ থাকবে সবগুলোর পক্ষে আমরা।

তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জন্য ২০২৩ সালে পাস হওয়া আইন বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। ওই আইন বাতিল করতে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া চিঠি অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, অসৎ উদ্দেশ্যে এনআইডি স্বরাষ্ট্রে নেওয়া হচ্ছিল। আমরা দ্রুত সময়ে এটা বাতিল করতে সফল হয়েছি। এত দ্রুত আর কোনো কিছুতে সফল হয়েছি কি না আমার জানা নেই।

আরও পড়ুন

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমি সরকারকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই যে, অতি দ্রুত সময়ে অ্যাডভাইজরি কমিটি দ্রুত অনুমোদন দিয়েছে। গতকাল (বুধবার) আমরা চিঠি পাঠিয়েছিলাম, আজ (বৃহস্পতিবার) এটা পাস হয়েছে।

তিনি বলেন, যখন জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হয়, তখন আমি গণমাধ্যমের খবরে জানতে পেরেছিলাম। দেশের একজন সিনিয়র নাগরিক হিসেবে তখনই আমি মনে করেছিলাম, কোনো মহৎ উদ্দেশে এটা নেওয়া হচ্ছে না। আমি সিইসি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দু’একজনের সঙ্গে আলাপের পর বলেছিলাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখতে হবে। এজন্য যা যা করার আমি করবো। সেজন্য ওই আইন বাতিল করতে চিঠি দিয়েছি।

এ সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সুপারিশ নিয়ে যেসব প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা ইতিবাচক। নির্বাচন কমিশনও এটা ভালোভাবে নিয়েছে। তবে সবাই যা চাই তা নাও হতে পারে। তবে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে এটা করেছি। অতীতের মতো আমরা কিছু পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা এমনভাবে সুপারিশ করেছি যেন কোনো গণহত্যাকারী ও দুর্নীতিবাজ নির্বাচনে অংশ না নিতে পারে।

তিনি বলেন, যারা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যায় করেছে, খুন করেছে, গুম করেছে তারা যেন নির্বাচনে অংশ না নিতে পারে। আমরা সুপারিশ করেছি ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে নির্বাচন বাতিল হবে, অনেকে এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছে, কেউ কেউ ৫০ শতাংশ করার কথা বলেছে। সুষ্ঠু ভোট হলে ভোটের হার অনেক বেশি হওয়া সম্ভব।

ড. বদিউল আলম আরও বলেন, সামনের দিনে নির্বাচন কমিশন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সেজন্য আইনি কাঠামো তৈরি এবং অতীতের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য দায়বদ্ধতার সুপারিশ করেছি। সংস্কার কমিশনের জরিপে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ মানুষ জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতামত দিয়েছে। নির্বাচন দুর্নীতিমুক্ত করতে দুর্বৃত্ত ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সেজন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আরএফইডি সভাপতি একরামুল হক সায়েমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এমওএস/ইএ

Read Entire Article