সব মান-অভিমান ভুলে জাতীয় স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করবো: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা যারা একসঙ্গে রাজনীতি করছি আমাদের চিন্তা-ভাবনায় পার্থক্য থাকতে পারে। সেই পার্থক্য আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দূর করার চেষ্টা করবো। সব মান-অভিমান ভুলে গিয়ে জাতীয় স্বার্থে একসাথে কাজ করবো। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মগবাজার আল ফালাহ মিলনায়তনে মজলিশে শূরা অধিবেশনে ২০২৬-২০২৮ সেশনের জন্য শপথ গ্রহণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতি স্বাধীনতার স্বাদ এখনও গ্রহণ করতে পারেনি। তার কারণ, দুর্নীতি ও দুঃশাসন। দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে জাতিকে মুক্তি করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এজন্য আমাদের নিজেদের ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আমাকে আমীরে জামায়াত নির্বাচিত করে আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছে এ দায়িত্বের জন্য আমি মোটেও উপযুক্ত নই। আমি আপনাদের মতই একজন। আমরা সম্মিলিতভাবে সংগঠন পরিচালনা করি। আল্লাহর মেহেরবানীতে আমার ভাইদের সহযোগিতায় আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। নানা ভুলত্রুটি সত্ত্বেও আমরা দায়িত্ব পালন করছি। এই ভুলত্রুটির জন্য আম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা যারা একসঙ্গে রাজনীতি করছি আমাদের চিন্তা-ভাবনায় পার্থক্য থাকতে পারে। সেই পার্থক্য আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দূর করার চেষ্টা করবো। সব মান-অভিমান ভুলে গিয়ে জাতীয় স্বার্থে একসাথে কাজ করবো।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মগবাজার আল ফালাহ মিলনায়তনে মজলিশে শূরা অধিবেশনে ২০২৬-২০২৮ সেশনের জন্য শপথ গ্রহণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতি স্বাধীনতার স্বাদ এখনও গ্রহণ করতে পারেনি। তার কারণ, দুর্নীতি ও দুঃশাসন। দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে জাতিকে মুক্তি করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এজন্য আমাদের নিজেদের ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাইতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আমাকে আমীরে জামায়াত নির্বাচিত করে আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছে এ দায়িত্বের জন্য আমি মোটেও উপযুক্ত নই। আমি আপনাদের মতই একজন। আমরা সম্মিলিতভাবে সংগঠন পরিচালনা করি। আল্লাহর মেহেরবানীতে আমার ভাইদের সহযোগিতায় আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। নানা ভুলত্রুটি সত্ত্বেও আমরা দায়িত্ব পালন করছি। এই ভুলত্রুটির জন্য আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। মহান আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমার কোন ভুলত্রুটি দেখলে আপনারা সমালোচনা করবেন এবং সংশোধন করে দিবেন। আপনাদের সমালোচনা ও সংশোধন যাতে গ্রহণ করতে পারি আল্লাহ আমাকে সেই তাওফিক দান করুন।’
জামায়াত আমির বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে অনেক ভাই নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন, জেল-জুলুম নির্যাতন ভোগ করেছেন। জেলখানা ছিলো আমাদের প্রথম আবাসস্থল। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণেই সরকার আমাদেরকে বারবার জেলে নিয়েছে। জামায়াতের তদানীন্তন আমীর, নায়েবে আমীর, সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলসহ আমরা ১১ জন শীর্ষনেতাকে হারিয়েছি। অনেকেই আহত ও পঙ্গু হয়ে জিন্দা শহীদ হয়ে এখনও বেঁচে আছেন। আল্লাহ আমাদেরকে উপযুক্ত প্রতিদানে ভূষিত করুন।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনে, ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে, ’৯০ সালের গণআন্দোলনে এবং গত সাড়ে ১৫ বছরে যারা শহীদ হয়েছেন আল্লাহ তাদের সবাইকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন এবং জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা দান করুন। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে যেসব যুবক-তরুণ নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ভূমিকা পালন করেছেন তাদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমি আশা করছি আগামীতেও তারা সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বার্থে ভূমিকা পালন করবেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আল্লাহ সেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত করার তাওফিক দান করুন।
তিনি আরও বলেন, অতীতে প্রবাসী ভাইদেরকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিলো। এবার তাদেরকে ভোটার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তারা যাতে ভোটার হয়ে আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন সেই জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা যাতে আগামীতে জাতীয় স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে পারি এবং জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এবং সংবিধানে বর্ণিত জনগণের সকল অধিকার আমরা যাতে নিশ্চিত করতে পারি সে জন্য ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসার জন্য আমি জাতীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের ও নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাশেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ও মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমীর আব্দুল মাজেদ আতাহারী ও মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এড. একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামুল বশির ও লে. জে. (অব.) হাসান সোহরাওয়ার্দী, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নুর ও উচ্চ পরিষদ সদস্য হাসান মামুন, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইউসুফ আলী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান আলহাজ্জ কারী মো. আবু তাহের প্রমুখ।
জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলরা, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা।
আরএএস/এনএইচআর
What's Your Reaction?