নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা কলেজে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা কলেজের নর্থ হলের সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি হলপাড়া ঘুরে কলেজের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় তারা ‘সন্ত্রাসীদের গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘নারায়ণগঞ্জে হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সমন্বয়ক আফজাল হোসেন রাকিব বলেন, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দ্রুত জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের ওপর বারবার হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা প্রমাণ করে দেশ এখনো ফ্যাসিবাদীদের কবল থেকে মুক্ত হয়নি। আমরা এই সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, দ্রুত সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে সব সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং দেশের সব জনগণের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, ছাত্র-জনতা এক হয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মুঈনুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও সহকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য রাতে ঢাকা থেকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। এ সময় নারায়ণগঞ্জে মেঘনা ব্রিজের আগে গাড়িটি স্লো হলে মুখোশ পরিহিত একদল তরুণ হাতে চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং মেয়েদের গায়ে হাত দেয়। আমাদের যখন গাড়ি থেকে নামানোর চেষ্টা করে তখন পুলিশ এলে তারা পালিয়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, এটি পরিকল্পিত একটি ঘটনা। কারণ অনেকগুলো গাড়ি থাকা সত্ত্বেও তারা আমাদের গাড়িকে টার্গেট করে। অতীতেও এমন ঘটনা আমরা দেখেছি। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানাই। আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপোষহীন, জুলাই আন্দোলনেও জীবনবাজি রেখে মাঠে ছিলাম। এসব হামলা করে আমাদের আটকে রাখতে পারবে না।
উল্লেখ্য, সাংগঠনিক কাজে বান্দরবানের লামায় যাওয়ার পথে রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাত ২টায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বহন করা গাড়ি দুর্বৃত্তদের হামলার মুখে পড়ে। ওই গাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, মাহমুদা সুলতানা, মোহাম্মদ রাকিব, মুঈনুল ইসলাম, ইব্রারিম নীরব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন মিতু ও ছাত্রনেতা মিশু আলী ছিলেন।