সমুদ্রের কৌশলী শিকারি মিমিক অক্টোপাস

1 month ago 6

সমুদ্রের গভীরে অসংখ্য রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো মিমিক অক্টোপাস। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘থাওমোক্টোপাস মিমিকাস’। সাধারণ অক্টোপাসের মতো দেখালেও, মিমিক অক্টোপাসের রয়েছে এক অদ্ভুত ক্ষমতা।

মিমিক অক্টোপাস প্রধানত ছোট সামুদ্রিক প্রাণি খেয়ে থাকে। সাধারণত ছোট আকারে জন্ম নেয় এবং পূর্ণবয়স্ক হলে এর আকার প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার হতে পারে।

নিজের শরীরের রং, আকৃতি ও আচরণ পরিবর্তন করে অন্য প্রাণীর মতো আচরণ করার দক্ষতা রয়েছে এই প্রাণির। এই ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যই তাকে করে তুলেছে সমুদ্রের সবচেয়ে কৌশলী শিকারি।

১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসির উপকূলে প্রথমবারের মতো মিমিক অক্টোপাস আবিষ্কৃত হয়। এটি অন্যান্য অক্টোপাসদের মতোই বুদ্ধিমান ও কৌশলী, তবে এর বিশেষত্ব হলো এটি প্রায় ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর রূপ নকল করতে পারে। এই প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে বিষাক্ত লায়নফিশ, ফ্ল্যাটফিশ, সাপ ইত্যাদি।

মিমিক অক্টোপাস তার শরীরের রং এবং আকার পরিবর্তন করতে পারে। শিকারিদের থেকে বাঁচার জন্য বা শিকার ধরার জন্য এটি নিজেকে বিভিন্ন বিষাক্ত বা বিপজ্জনক প্রাণীর রূপে রূপান্তরিত করতে সক্ষম। এই অনন্য দক্ষতা তাকে সমুদ্রের অন্যান্য প্রাণীর থেকে আলাদা করে তুলেছে। এছাড়া এটি চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে এমনভাবে মিশে যেতে পারে যে তাকে খুঁজে বের করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

মিমিক অক্টোপাস প্রধানত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উষ্ণ এবং অগভীর জলাশয়ে বাস করে। এটি সাধারণত পলিমাটির উপরের স্তরে লুকিয়ে থাকে এবং সুযোগ পেলেই শিকারির চোখ ফাঁকি দিতে বা শিকার ধরতে নকল করার কৌশলটি ব্যবহার করে।

এই অক্টোপাসের আত্মরক্ষার কৌশলগুলো সত্যিই অসাধারণ। বিষাক্ত প্রাণীর রূপ ধারণ করা ছাড়াও, এটি শিকারিকে বিভ্রান্ত করার জন্য হঠাৎ করে রং পরিবর্তন করতে পারে। আবার কোনো শিকারি আক্রমণ করলে এটি সাঁতরে দ্রুত অন্য জায়গায় চলে যেতে পারে।

মিমিক অক্টোপাস আমাদের দেখায় কীভাবে প্রকৃতি আত্মরক্ষার জন্য অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত এবং কৌশলী ব্যবস্থাপনা তৈরি করেছে। এই সামুদ্রিক প্রাণীটির ব্যতিক্রমী ক্ষমতা প্রমাণ করে যে, প্রকৃতির জগতে প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখার আছে।

তথ্যসূত্র: ন্যাশনল জিওগ্রাফিক

কেএসকে/জেআইএম

Read Entire Article