ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে শুধু আবেগ নয়, প্রয়োজন যোগাযোগের সেতু। সম্পর্ক ভাঙার বড় কারণগুলোর একটি হলো — ঠিকভাবে কথা না বলা, না শোনা বা ভুল বোঝা। অথচ খোলামেলা যোগাযোগই পারে একটি সম্পর্কে আস্থা, বোঝাপড়া আর শান্তি ফিরিয়ে আনতে।
কেন যোগাযোগ এত গুরুত্বপূর্ণ
জার্নাল অব ম্যারেজ অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপি (২০২১)–এর এক গবেষণায় বলা হয়, দম্পতির মধ্যে নিয়মিত ও ইতিবাচক যোগাযোগ মানসিক ঘনিষ্ঠতা, যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়ায়। অন্যদিকে, নীরবতা বা তর্কাতর্কি সম্পর্কের মান কমিয়ে দেয়।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যখন সঙ্গীরা পরস্পরের অনুভূতি মনোযোগ দিয়ে শোনে ও জাজমেন্টাল না হয়ে প্রতিক্রিয়া দেয়, তখন সম্পর্ক অনেক স্থিতিশীল হয়।
সঠিক যোগাযোগের ৫টি সহজ কৌশল
১. শোনার সময় সত্যিই শুনুন
বেশিরভাগ মানুষ কথোপকথনে উত্তর দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়, শোনে না। সঙ্গী কথা বললে মাঝখানে বাধা না দিয়ে পুরোটা শুনুন। এতে সে বোঝে—তার অনুভূতি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
২. অভিযোগ নয়, অনুভূতি বলুন
“তুমি কখনো আমার কথা শোনো না” বলার বদলে “তুমি মনোযোগ দিলে আমি স্বস্তি পাই” বলুন। অভিযোগের বদলে অনুভূতি প্রকাশ করলে কথায় কোমলতা আসে। তর্ক নয়, বোঝাপড়া তৈরি হয়।
৩. সময় ও পরিবেশ বেছে নিন
বড় বা সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে কথা বলার সময়টা যেন দু’জনের মন শান্ত থাকে, সেদিকে খেয়াল করুন। রাগ বা ক্লান্ত অবস্থায় আলোচনা করলে ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে।
৪. শরীরের ভাষা খেয়াল করুন
চোখে চোখ রাখা, মাথা নাড়া, কণ্ঠস্বর — এসব ছোট ইঙ্গিতই বোঝায় আপনি মনোযোগ দিচ্ছেন।
৫. নীরবতাকেও সম্মান দিন
সব কথা সঙ্গে সঙ্গে বলা প্রয়োজন নয়। কখনো সময় দিন, যাতে দু’জনেই ভাবতে পারেন।
কীভাবে ভুল বোঝাবুঝি সামলাবেন
যেকোনো সম্পর্কেই মতবিরোধ থাকবে। কিন্তু সেটাকে প্রতিযোগিতা নয়, বোঝার জায়গা বানান। আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন–এর (২০২২) এক পরামর্শে বলা হয়— তর্কে জেতার চেষ্টা না করে সঙ্গীকে বোঝার চেষ্টা করুন।
সম্পর্ক তখনই টিকে থাকে, যখন দু’জন মানুষ ঠিকমতো কথা বলতে জানে, শুনতে জানে। সঙ্গীর সঙ্গে প্রতিদিন কিছু সময় রাখুন শুধু শোনার, বুঝতে চাওয়ার, অনুভূতি ভাগ করার জন্য। কারণ সঠিক যোগাযোগই ভালোবাসার সবচেয়ে শক্ত ভিত্তি।
সূত্র: জার্নাল অব মেরেজ অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপি (২০২১), আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (২০২২)
এএমপি/জেআইএম

6 hours ago
7









English (US) ·