সময় টিভির সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি নিয়ে প্রেস সচিবের স্ট্যাটাস

17 hours ago 7

সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির কয়েক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ ঘটনায় অনেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন। এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি এ স্ট্যাটাস দেন। 

শফিকুল আলম বলেন, সম্প্রতি সময় টিভিতে যা ঘটেছে তার জন্য অনেকে সরকারকে দোষারোপ করার চেষ্টা করছেন। সিটি গ্রুপের নিয়ন্ত্রিত এ প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ সাংবাদিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোম্পানির পরিবর্তে সরকারকে এর দায় নিতে হবে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, যা কোনোভাবে যথার্থ নয়। 

তিনি বলেন, প্রথমত আমরা বারবার বলছি আমরা কোনো সংবাদমাধ্যমে হস্তক্ষেপ করিনি। যদি কোনো জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বা গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা কোনো সংবাদপত্রে নিয়োগ অথবা ছাঁটাইয়ে প্রভাবিত করেন বা চাপপ্রয়োগ করেন তাহলে তা আমাদের জানান। আমরা অবিলম্বে পদক্ষেপ নেব। আমরা ইতিমধ্যে এ রকম অন্তত দুটি ঘটনায় ব্যবস্থা নিয়েছি, যার একটি আমাদের সময় পত্রিকা, অন্যটি বৈশাখী টিভি।

প্রেস সচিব বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা যা করছে তার জন্য আমরা দায়ী নই। আমরা ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছি। কিন্তু তার মানে এমন নয় যে আমরা তাদের আদেশে পরিচালিত হচ্ছি। যদি তাই হতো, তাহলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের সময় টিভিতে প্রতিবাদ করতে হতো না। তারা আমাদের কাছে তাদের তালিকা পাঠাত এবং আমরা সিটি গ্রুপকে বাস্তবায়নের জন্য বলতাম। আমরা শুনেছি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেলে তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাংবাদিক নিয়োগের জন্য চাপপ্রয়োগের চেষ্টা করছে। কেউ কেউ বিষয়টি মেনেও নিয়েছে।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে মিডিয়ার মালিক কোম্পানির বড় দায়িত্ব রয়েছে। সিটি গ্রুপই তাদের সাংবাদিকদের বরখাস্ত করার জন্য একমাত্র দায়ী। এমনকি পশ্চিমা সমাজেও লবিং গ্রুপ বা অ্যাডভোকেসি গ্রুপ থেকে সাংবাদিকদের পদত্যাগের জন্য চাপের নজির রয়েছে। বিরোধী মন্তব্যের কারণে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। 

শফিকুল আলম বলেন, বিবিসি চলতি সপ্তাতে সময় টিভির সাংবাদিক চাকরিচ্যুতির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তারাও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করেছে। অধিকার বা অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অথবা সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকেই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। 

তিনি বলেন, প্রায় সব ক্ষেত্রেই, মালিকানার কোম্পানিগুলো এই চাপ থেকে নিজেদের দায় এড়িয়ে যায়। তবে সিটি গ্রুপ এবং সময় টিভির শীর্ষ কর্মকর্তারা ভিকটিমদের নিয়ে খেলায় মেতেছে। তারা সাংবাদিকদের বরখাস্ত না করে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে বরখাস্ত করবে না বলে জানাতে পারত। তারা তাদের ভিত্তি ধরে রাখতে পারত যেমনটা অন্যান্য সংবাদমাধ্যম করেছে।  

প্রেস সচিব বলেন, যারা এ ঘটনায় সরকারের দিকে আঙুল তুলছেন তাদের উচিত প্রথমে সিটি গ্রুপের সমালোচনা করা। সংবাদিক চাকরিচ্যুতির ঘটনায় প্রথম ও প্রধান দায়ভার সংবাদমাধ্যমটিরই। দুঃখের বিষয় হলো শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আমলে সময় টিভি যে ধরনের অপসাংবাদিকতা করেছে আমরা তার খুব কমই সমালোচনা করতে শুনেছি। বরং তারা হাসিনার সময়ে যা ঘটেছে তার সঙ্গে এখনকার ঘটনার মিথ্যা তুলনা দিচ্ছে।
 

Read Entire Article