সরকার পতনের ডাক ইমরান খানের, গণঅভ্যুত্থানের দিকেই যাচ্ছে পাকিস্তান?
বাংলাদেশের পথ ধরে পাকিস্তানেও চলছে গণঅভ্যুত্থান। জেলে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তিসহ চার দফা দাবিতে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভে নেমেছে তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই সমর্থকরা। গুঞ্জন উঠেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা সমাবেশ থেকে দেশটিতে সরকার পতনের গণঅভ্যুত্থান হতে পারে। এই বিক্ষোভ নিয়ে আবারও চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে পাকিস্তানের রাজনীতি।
অনেকে বলছেন, ইমরান খানের হুমকি ও তার বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় সুতোয় ঝুলছে শাহবাজ শরিফের ভাগ্য। ইমরান খানকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়েও দেশটির সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চলছে।
এদিকে জেলে বসেই পাকিস্তানের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছে ইমরান খান। যাকে শেষ ডাক বলেও আখ্যায়িত করা হয়েছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইসলামাবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দিতে গাড়ির বহর নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ছুটে যেতে দেখা যায়। নির্বাচনী ম্যান্ডেট চুরি, বেআইনি গ্রেপ্তার এবং সংবিধানের ২৬তম সংশোধনীর প্রতিবাদে ১৩ নভেম্বর এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন ইমরান খান।
২০২৩ সালের আগস্টে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর থেকে তার দল তার মুক্তি এবং ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কথিত কারচুপির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। এবার দেশবাসীকে অবৈধ নির্বাচন ও সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার জন্য ‘চূড়ান্ত ডাক’ দেন ইমরান খান। তার ডাকে ব্যাপক বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়েছে পিটিআই।
রোববার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কন্টেইনার দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শহরের মূল সড়কগুলো। এ ছাড়া পিটিআইয়ের বিক্ষোভের কারণে সোমবার ইসলামাবাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইমরান খানের ডাকা এই বিক্ষোভ রুখে দিতে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর আগে ইসলামাবাদে দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। নিষিদ্ধ করা হয় সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জমায়েত।
এদিকে এক ভিডিও বার্তায় দেওয়া বিক্ষোভ সমাবেশ নিয়ে বুশরা বিবির আহ্বানকে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বিপজ্জনক হিসেবে দেখছেন। তারা সতর্ক করেছেন, এই বিক্ষোভ যদি সহিংসতায় রূপ নেয়, তবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও গভীর হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পাকিস্তানে কি আবারও এক অভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে? নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। পাকিস্তানের রাজনীতি এখনো অস্থিতিশীল এবং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।