সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আয় করমুক্ত, ট্রাস্টের আয়ে বসবে কর

3 months ago 42

বড় পরিবর্তন ছাড়াই শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে অর্থবিল ২০২৪। রোববার (৩০ জুন) সংসদে পাস হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজট, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

অর্থবিলে বেশকিছু সংশোধনী প্রস্তাব আনার পাশাপাশি কিছু নতুন প্রস্তাবও পাস হয়েছে। যার অন্যতম হলো সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আয় পুরোপুরি করমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া একজন করদাতা কোনো অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি কর দিলে ওই করদাতার নথি নিরীক্ষায় ফেলা হবে না। এছাড়া ট্রাস্টের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসবে। ব্যক্তিগত একাধিক গাড়ি থাকলেই কেবল এখন থেকে সারচার্জ বসবে। কোম্পানির গাড়ির ক্ষেত্রে তা আগের মতোই মওকুফ থাকবে।

অর্থবিল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে এবারের বাজেটে। ধনীদের করছাড়ও রয়ে গেছে আগের জায়গায়। পাশাপাশি গত ৬ জুন প্রস্তাব করা বাজেটে এমপিদের কর দিয়ে গাড়ি আমদানি করার বিধানও টেকেনি।

বাড়তি রাজস্ব আদায়ের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ধনীদের ওপর করহার বাড়িয়েছিলেন। কিন্তু সেই অবস্থানে তিনি থাকতে পারেননি। ধনীদের আয়কর হার আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সর্বোচ্চ আয়কর হার ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে, যা বাজেট প্রস্তাবে ৩০ শতাংশ ছিল। বছরে যারা ৩০ লাখ টাকার বেশি করযোগ্য আয় করেন, তাদের ক্ষেত্রে হার আগের মতোই থাকলো।

গত ৬ জুন বাজেট ঘোষণার পর মুঠোফোনে বাড়তি কর, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া এবং করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানো নিয়ে সমালোচনা হয়।

অন্যদিকে ধনীদের ওপর বাড়তি কর আরোপ এবং সংসদ সদস্যের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বাতিল করে কিছু শুল্ক আরোপের উদ্যোগের বিষয়টির প্রশংসা করা হয়। কিন্তু অর্থবিল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মুঠোফোনে কর কমেনি, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে। করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি।

বাজেট প্রস্তাবের সময় শহর-গ্রাম নির্বিশেষে দেশের যেকোনো স্থানে কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করলে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, রিটার্ন জমার স্লিপ (প্রমাণপত্র) ছাড়া কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা যাবে না।

তবে শনিবার অর্থবিল পাসের সময় এই প্রস্তাবে সংশোধনী আনা হয়েছে। ফলে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে এখন রিটার্ন জমার স্লিপ লাগবে। বিয়ে ছাড়াও বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন, গায়েহলুদ, খতনাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান করতে কমিউনিটি সেন্টার ও মিলনায়তন ভাড়া করা হয়। বর্তমানে ৪৩ ধরনের সেবা পেতে রিটার্ন জমার কপি লাগে। এই তালিকায় কমিউনিটি সেন্টার ও মিলনায়তন ভাড়া ছাড়া আরও কয়েকটি খাত যুক্ত করা হয়েছে। যেমন হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নিবন্ধন ও নবায়নে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা এনে যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা পাস করা হয়েছে।

এছাড়া আগের মতই অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক এলাকায় বিনিয়োগকারীরা বিনাশুল্কে বা শূন্য শুল্কে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারবেন উদ্যোক্তারা। এবারের বাজেটে এসব যন্ত্রপাতি আমদানির ওপর ১ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এসএম/ইএ/জেআইএম

Read Entire Article