আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস বা বিশ্ব শান্তি দিবস হলো জাতিসংঘের দ্বারা স্বীকৃত একটি আন্তর্জাতিক দিবস। দিবসটি বার্ষিক একুশে সেপ্টেম্বর উদযাপন করা হয়। সর্বজনীন শান্তি আনয়নে ঘোষিত দিবসটির লক্ষ্য হলো দুনিয়া থেকে যুদ্ধবিগ্রহ ও বৈপরীত্য বিলুপ্তি সাধন। জাতিসংঘ এই বিশেষ দিবস প্রতিপালনের মাধ্যমে ভুবনজুড়ে শান্তির ধারণা বিস্তৃত করতে এবং শান্তি ও সম্প্রীতির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করে। দিবসটি প্রথমবার উদযাপিত হয় ১৯৮১ সালে। এ সময়ে জাতিসংঘের সব সভ্য ভূখণ্ডে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
এ বছর (২০২৫ সালের) আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তোলা’ (Cultivating a Culture of Peace)। এ ছাড়া এই দিনে বিভিন্ন দেশের শিল্পী, শিক্ষাবিদ ও মানবতাবাদীদের ‘জাতিসংঘ শান্তিদূত’ হিসেবে নিয়োগ করা হয় ও তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড স্মরণ করা হয়ে থাকে। ২০২৫ সালের বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তোলা এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শান্তি বলতে প্রচলিতভাবে নিরুপদ্রব অবস্থিতি হৃদয়ঙ্গম করে, যেথা মানবের মাঝামাঝি সম্প্রীতি এবং পরস্পরকে ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, বিদ্বেষ ও অনিষ্ট থেকে নিষ্কৃতি অর্প্রণ করে। এটি কেবল বিশৃঙ্খলার অবর্তমানতা নয়, বরং নির্মলতা প্রশান্তি, ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার এবং নিজের ও প্রকৃতির সঙ্গে সহোদরত্ব, সুবিচার এবং স্বকীয় ও নিসর্গের মিলনযোগ্য জীবনযাপন করার একটি শুভ স্থিতি-কেও প্রণিধান করায়। শান্তিকে একটি নিষ্পত্তি হিসেবেও গণ্য করা হয়, যেখানে মানুষ একে অপরের সঙ্গে সামাজিক বন্ধন তৈরি করে ও তার সমস্যার মীমাংসা করে। এটি শান্তির একটি মৌলিক ধারণা, যেখানে কোনো যুদ্ধ, শত্রুতা বা শারীরিক সহিংসতা থাকে না। এটি মনের অন্তর্নিহিত একটি অবস্থা, যেখানে মানুষ চাপ সত্ত্বেও শান্ত ও স্থির থাকতে পারে। এটি ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়, হিংসা ও সংঘাত দূর করে পারস্পরিক সম্পর্ককে বন্ধুত্বপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। শান্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সমাজে ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা এবং মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা। মানুষ যখন নিজের ও সমগ্র প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করে জীবনযাপন করে, তখনও শান্তি বিরাজ করে।
সরল ভাষায়, শান্তি অর্থ যুদ্ধমুক্ত অবস্থা নয়, বরং এমন একটি প্রভৃতি যেখানে আনন্দ,তৃপ্তি, প্রশান্তি এবং নির্বিঘœতা এবং পারস্পরিক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ বিরাজ করে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর নানান দেশ ও জাতির মধ্যকার শান্তি, একতা, সমঝোতা ও মিত্রতা ধরে রাখার জন্য সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে গঠিত হয়েছিল। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে অসফল হওয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এর উত্তরসূরি হিসাবে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। জাতিসংঘও বিশ্ব শান্তি সংরক্ষণ করতে নিষ্ফল হয়েছে।
অনেকসময় একটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা ও রাজনৈতিক কোন্দলে পরাশক্তিগুলোর হস্তক্ষেপ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যেমন, আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধ ও ইরাক যুদ্ধ, সুক্তরাষ্ট্র-আফগান যুদ্ধ এবং এ সময় চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরাইল কর্তৃক গাজা আগ্রাসন। মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার মদদপুষ্ট ও তাদের অস্ত্রের গুদাম সন্ত্রাসী রাষ্ট্র দখলদার ইসরাইলকে অশান্তির বরপুত্র বলা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলের গাঁজা আগ্রাসনের পাশাপাশি ইরান, ইয়েমেনসহ পার্শ্ববর্তী দেশে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ, এমনকি সর্বশেষ কাতার আক্রমণের মাধ্যমে অশান্তির বিকাশ লাভ করছে।
জাতিগত সংঘাতের মধ্যে মিয়ানমার অন্যতম, বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর দীর্ঘকাল ধরে মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার সরকার এবং আরাকান আর্মিসহ বিভিন্ন চরমপন্থি গোষ্ঠী কর্তৃক নিপীড়নের ফলে এ সময়ে প্রায় ১৫ লাখ নিগৃহীত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে এবং মানবেতর জীবনযাপন করছে। অন্যদিকে আরব বসন্তের পর, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জাতিগত সহিংসতা তথা অভ্যুত্থান ও বিপ্লব সংগঠিত হচ্ছে। যা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা।এইসব পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের অপরিহার্য ভূমিকা থাকার কথা থাকলেও, বিশ্বজনীন এ সংঘটি উক্তির মধ্যে তাদের প্রচেষ্টা সীমাবদ্ধ রেখেছে। সমগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘকে একটি ব্যর্থ সঙ্গই বলা যায়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে এসেও গুজব সৃষ্টির মাধ্যমেও মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য রটনা করে সমাজে শান্তি বিনষ্ট করে। এটি সামাজিক, পারিবারিক, এবং রাষ্ট্রীয় পর্য্যায়ে মানুষের মনে সন্দেহ, ভয় ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে অশান্তির সৃষ্টি করে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ফলে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয়।
যুগে যুগে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব বরেন্য ব্যক্তিবর্গ ও কবি সাহিত্যিকগণ মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেছেন। শান্তির জন্য কিছু বিখ্যাত উক্তি হলো: যদি তুমি তোমার শত্রুর সঙ্গে শান্তি স্থাপন করতে চাও, তাহলে তোমাকে তোমার শত্রুর সঙ্গে কাজ করতে হবে-পিস নিউজ নেটওয়ার্ক অনুসারে; এবং ‘অহিংসা একটি শক্তিশালী এবং ন্যায্য অস্ত্র, যা আঘাত না করেই কেটে ফেলে-মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। শান্তি নেই, আছে শুধু শান্তি’ অথবা ‘শান্তির কোনো পথ নেই, কেবল শান্তি আছে’। এই বিখ্যাত উক্তিটি করেছেন মহাত্মা গান্ধী, যেখানে তিনি শান্তির ওপর জোর দিয়ে বলেছেন যে শান্তি একটি পথ নয়, বরং এটি নিজেই একটি অবস্থা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তি সম্পর্কিত একটি বিখ্যাত উক্তি হলো: ‘যেখানে জ্ঞান দুটি ধারায় প্রবাহিত হয়- পূর্ব এবং পশ্চিম থেকে এবং তাদের ঐক্যের মধ্যে সত্যের একত্ব অনুভূত হয় যা সমগ্র বিশ্বকে ব্যাপ্ত এবং টিকিয়ে রাখে’। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব শান্তি কেবল তখনই সম্ভব যখন পূর্ব ও পশ্চিম একে অপরের সঙ্গে একটি সাধারণ ভিত্তি এবং সমান সহযোগিতার মাধ্যমে মিলিত হবে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার কবিতা, বিশেষ করে ‘বিদ্রোহী’-এর মতো বিখ্যাত রচনাগুলোতে তিনি শান্তি, সাম্য ও মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তার লেখায় নিপীড়ন, শোষণ ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে এক সোচ্চার প্রতিবাদের সুর ছিল, যা শান্তিরই এক ভিন্ন রূপ। অনেক ক্ষেত্রে নজরুলকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়, কারণ তিনি সমাজের অশান্তি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, যা পরোক্ষভাবে শান্তিরই প্রচার।
পৃথিবীর সকল ধর্মই শান্তি বার্তা দিয়েছে। নিম্নে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের গ্রহণ কৃত ধর্ম, তথা ইসলাম, খ্রিস্ট, বৌদ্ধ এবং সনাতন (হিন্দু) ধর্মের দৃষ্টিতে শান্তি সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো :
ইসলামের দৃষ্টিতে শান্তি হলো শুধু যুদ্ধ বা সংঘাতের অনুপস্থিতি নয়, বরং এটি ন্যায়বিচার, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা, সহানুভূতি, এবং মানব সমাজে ভ্রাতৃত্বের এক সুষম অবস্থা, যা আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অর্জিত হয়। ইসলাম নিজে আত্মসমর্পণ করা ও ‘সালাম’ (শান্তি) শব্দের মূল থেকে উদ্ভূত এবং এই ধর্ম শান্তি ও সহনশীলতার ওপর জোর দেয়, যা ব্যক্তিগত হৃদয় থেকে শুরু হয়ে সামাজিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পর্য্যন্ত বিস্তৃত। ইসলামি শরিয়াহর সকল বিধি-বিধান বিশ্ববাসীর জন্য শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর এবং এগুলোর উদ্দেশ্য হলো বিশ্বজুড়ে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করা। ইসলাম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ধর্মের মধ্যে বোঝাপড়ার আহ্বান জানায়, যা হুদায়বিয়ার সন্ধি ও মদিনার চুক্তির মাধ্যমে প্রমাণিত। ইসলামের মূল ধারণা হলো এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ-এর কাছে আত্মসমর্পণ করা, যা শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি।
সনাতন ধর্মের দৃষ্টিতে শান্তি হলো মোক্ষ বা মুক্তি অর্জন, যা কামনা-বাসনা ও জাগতিক আসক্তি থেকে মুক্ত হয়ে আত্মাকে পরম সত্তার সঙ্গে একীভূত করার মাধ্যমে সম্ভব হয়। এই শান্তি অর্জনের জন্য অহিংসা, তপস্যা এবং আত্মজ্ঞান লাভ করা অপরিহার্য। এটি শুধু বাহ্যিক শান্তিই নয়, বরং আত্মিক শান্তি ও প্রশান্তিও বটে।
বৌদ্ধধর্মের দৃষ্টিতে শান্তি হলো শারীরিক, সামাজিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা ও সম্প্রীতির অবস্থা, যা অহিংসা, মৈত্রী এবং সহানুভূতির মাধ্যমে অর্জিত হয়। এটি বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ পরিবেশের প্রতি সচেতনতা ও প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি লাভ এবং আকাঙ্ক্ষা ও আসক্তি থেকে মুক্ত হয়ে নির্বাণপ্রাপ্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত শান্তি অর্জন করে। গৗতম বুদ্ধ অহিংসা, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন, যা সমাজে ও মানুষের অন্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শান্তি কেবল ব্যক্তিগত বিষয় নয়, বরং সমাজে বসবাসকারী ব্যক্তিদের মধ্যে সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব এবং সহাবস্থানের এক অবস্থা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধের শিক্ষাকে ধারণ করে একটি সৌহার্দপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করে, যেখানে যুদ্ধবিগ্রহ ও জাতিগত হানাহানি থাকবে না।
খ্রিস্টধর্মের দৃষ্টিতে, শান্তি হলো ঈশ্বর প্রদত্ত একটি অবস্থা, যা যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে আসে, যিনি তার শিষ্যদের ‘আমার শান্তি দিয়ে যাচ্ছি’ বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। এটি কেবল যুদ্ধ বা সংঘাতের অনুপস্থিতিই নয়, বরং ঈশ্বরের সঙ্গে এবং একে অপরের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন, অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং ন্যায়বিচারের এক অবস্থা। যিশুখ্রিস্টের শিক্ষা ও আদর্শ শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবজাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, শান্তি হলো ঈশ্বরের একটি অনুগ্রহ ও প্রতিজ্ঞা, যা বিশ্বাসীদের জন্য সংরক্ষিত। যিশু তার ক্রুশারোহণের আগে তার শিষ্যদের শান্তি সম্পর্কে যে বার্তা দেন, তা থেকে বোঝা যায় শান্তি তার মাধ্যমে আসে। যিশুর জীবন, শিক্ষা ও আদর্শ, যেমন প্রেম ও ক্ষমা, বিশ্বজুড়ে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক। খ্রিস্টান শান্তিবাদীরা বিশ্বাস করেন যে, বাইবেলের শিক্ষা অনুযায়ী ঈশ্বর তার অনুসারীদের যুদ্ধের পথে না গিয়ে, জবরদস্তিমূলক শক্তি ব্যবহার না করে শান্তি খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছেন। খ্রিস্টানদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য প্রেম, ক্ষমা ও অপরের প্রতি সহানুভূতি অপরিহার্য।
খেলাধুলা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে অভিমত দিয়েছেন কয়েজন গবেষক। দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে খেলা দেশগুলোর মধ্য একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ঠিকই, কিন্তু খেলাধুলা একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে পরিচালিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী হেরে গেলেও তা যুদ্ধের থেকেও অধিক মান্য। প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার কুরুচিপূর্ণ সম্পর্ককে অলিম্পিক খেলা অনেকাংশে লাঘব করেছিল। এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতা হয় ঠিকই, কিন্তু তা একটি নির্দিষ্ট নিয়মের ভেতরে হয়, ফলে হারলেও হেরে যাওয়া পক্ষের কোনো সামরিক বা রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ থাকে না।
বাংলাদেশ শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সরকার বাড়ি, স্কুল, সমাজ ও জাতির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঠিক এখনই তাৎপর্যপূর্ণ গুরুত্বারোপ করা আবশ্যক। অশুভ অতীত স্মৃতি থেকে হারিয়ে হলেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে গুরুত্বারোপ করতে হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠা শুধু জাতিসংঘ, সরকার বা কারও একক প্রচেষ্টায় সম্ভব নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সমতা, সংহতি, এবং সামাজিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে নাগরিক পর্যায়েও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হওয়া জরুরি। টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের সকলকে সর্বত্রই শান্তি এবং সম্প্রীতি চর্চা করতে হবে।
লেখক: ড. মো. আনোয়ার হোসেন। প্রাবন্ধিক, কথা সাহিত্যিক, প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী সংগঠন ফ্রিডম ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি অ্যালকোহল।