সাংবাদিক তুরাব হত্যায় পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গত ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক আবু তাহের মোহাম্মদ (এটিএম) তুরাব হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পুলিশ সদস্য উজ্জ্বল সিনহাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে তাকে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক আব্দুল মোমেন।
এর আগে রোববার (১৭ নভেম্বর) রাতে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর সিলেটের বন্দরবাজার এলাকার কালেক্টরেট মসজিদের সামনে মিছিলরত মুসল্লিদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের ছররা গুলিতে গুরুতর আহত হন দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি ও দৈনিক জালালাবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু তাহের মোহাম্মদ তুরাব। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ময়নাতদন্তে সাংবাদিক তুরাবের শরীরে ৯৮টি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ২৪ জুলাই নিহত তুরাবের ভাই আবুল হোসেন মোহাম্মদ আজরফ জাবুর অজ্ঞাতপরিচয় পুলিশ সদস্যদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ সাধারণ ডায়েরি হিসেবে লিপিবদ্ধ করে। এর মধ্যে ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বদলি করা শুরু হয়।
পরবর্তীতে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ১৯ আগস্ট নিহত তুরাবের ভাই আবুল হোসেন মোহাম্মদ আজরফ জাবুর বাদী হয়ে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সাদেক কাউসার দস্তগীর, নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মিজানুর রহমান, কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুর রহমান, বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, এসআই কাজী রিপন সরকার।
সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পিযূষ কান্তি দে, সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাংবাদিক সাজলু লস্কর, সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিসিকের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, নগরীর চালিবন্দর এলাকার নেহার মঞ্জিলের বাসিন্দা শিবলু আহমদ (মো. রুহুল আমিন), নগর পুলিশের কনস্টেবল সেলিম মিয়া, আজহার, ফিরোজ, উজ্জ্বল সিনহা।
সিলেটে পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ডিএমপিতে কর্মরত ছিলেন।