বলিউড তারকা সাইফ আলি খানকে ১৬ জানুয়ারি সকালে তার বান্দ্রার ফ্ল্যাটে ছুরিকাঘাত করা হয়। ঘটনার পর সন্দেহভাজন অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করা হয় শরিফুল ইসলাম শেহজাদ ওরফে মোহাম্মদ রোহিলা আমিন ফকির নামে একজনকে। আটক অভিযুক্তকে শুক্রবার আদালতে তোলা হলে তার রিমান্ড ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন :
সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর মুম্বাই পুলিশের বরাতে ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিক। তবে অভিযুক্তের আইনজীবীরা তথ্যটি মিথ্যে দাবি করে বলেন, ‘গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত ফকির দীর্ঘদিন ধরেই মুম্বাইয়ের বাসিন্দা’।
এ নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। হয়েছে আলোচনা সমালোচনাও। এবার আটক ব্যক্তি সাইফের ওপর হামলাকারী নন বলে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। গ্রেফতার শেহজাদ ও ওরফে ফকিরের বাবা দাবি করেছেন, সাইফের বাড়িতে হামলাকারী হিসেবে সিআইটিভি ফুটেজে যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে সেটা তার ছেলে নয়। কিছু সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীও দাবি করেছেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি সেই লোক নন যাকে সিআইটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। দুজনের চেহারা মিলছে না। তবে কি ভুল মানুষকে গ্রেফতার করেছে মুম্বাই পুলিশ- এই প্রশ্ন উঠছে।
এদিগকে গতকাল শুক্রবার গ্রেফতার ফকিরকে আদালতে তোলা হয়। সেখানে পুলিশও অভিযুক্ত ব্যক্তির চেহারা শনাক্তকরণ পরীক্ষার মাধ্যমে সিআইটিভি ফুটেজে উপস্থিত ব্যক্তির সঙ্গে তার মিল যাচাইয়ের দাবি করেছে।
সাইফ আলি খানের ফ্ল্যাটের সিআইটিভি ফুটেজে ভবনের সিঁড়ির কাছে দেখা গেছে আটক ফকিরকে। সেই ফুটেজ দেখেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মুম্বাই পুলিশ আরও নিশ্চিত হতে আটক ফকিরের চেহারা শনাক্তকরণ পরীক্ষা করতে যাচ্ছে।
পুলিশের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমস আরও জানায়, গতকাল শুক্রবার আদালতে পুলিশ আটক ফকিরের পায়ের ছাপ সংগ্রহ করবে বলেও জানায়। সেই ছাপ সাইফ আলি খানের বাসায় পাওয়া হামলাকারীর পায়ের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। পুলিশ আরও জানায়, ফকিরের জুতো এখনও উদ্ধার করা হয়নি। সাইফের ওপর হামলায় ব্যবহৃত ছুরির একটি অংশও পাওয়া যায়নি। সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আলামাতগুলো হাতে এলেই সব ধোঁয়াশা কেটে যাবে।
এছাড়াও পুলিশের দাবি, ফকির তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। নানাভাবে ভুল তথ্য দিয়ে তদন্তে বিভ্রান্ত্রির সৃষ্টি করছেন। সেজন্য তাকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
আদালতকে পুলিশ আরও জানায়, ফকিরের বাংলাদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়েছে, যা তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে। পুলিশ আরও দাবি করেছে, তদন্তের জন্য ফকিরের ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে সাহায্যকারী ব্যক্তিদের সন্ধান প্রয়োজন। তাকে খোঁজা হচ্ছে। তাই ফকিরকে পুলিশি হেফাজতে রাখতে হবে।
এদিকে ফকিরের আইনজীবী দিনেশ প্রজাপতি এবং সান্ডীপ শেরখানে পুলিশের এই আবেদনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেন। তাদের দাবি- সাইফ আলি খান যথেষ্ট সময় পেয়েও পুলিশকে ডাকেননি। তারা আরও দাবি করেন, পুলিশ যে সমস্ত আলামত উদ্ধার করতে চায় তাতে অভিযুক্তকে রিমান্ডে রাখার প্রয়োজন নেই। তাই অভিযুক্তের রিমান্ড বাতিল করে তাকে বিচারিক হেফাজতে রাখার আবেদন করেন তারা।
তবে আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করে ফকিরকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
এলআইএ/এমএস