সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র ও রেলওয়ে বাংকার এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ঘটনায় পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে গণশুনানি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে এ গণশুনানি হয়।
এদিকে, সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় জড়িত ৫০ জনের খোঁজে এবার তদন্তে নেমেছে সিআইডি। বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা অনুসন্ধান শুরু করে।
এর মধ্যে পাথর উদ্ধারে গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে জেলা প্রশাসনের অভিযান। এ সময় পাঁচ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার এবং এক ব্যক্তিকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এদিন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানার ১১ সদস্যকে বদলি করা হয়। অবশ্য সিলেট পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এটি নিয়মিত বদলিরই অংশ।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় সিলেটে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন বলেন, সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় রাষ্ট্রের দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যেন কোনো ধরনের প্রভাব না পড়ে, সে জন্য সব বিষয় গোপনীয় রেখেই সতর্কতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি।
জাহেদা পারভীন বলেন, আমরা দুটো বিষয়কে সামনে রেখে কাজ করছি। প্রথমটি কারা এ ঘটনায় জড়িত, কার কী দায় আছে। আর দ্বিতীয়টি ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে আমাদের প্রস্তাবনা দেব।
এ শুনানিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী সংগঠন, ট্রাক পরিবহন মালিক সমিতি ও পাথর ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বক্তব্য দেন। শুনানিতে সিলেট প্রেস ক্লাব নেতারাও অংশ নেন।
এর আগে মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি সরেজমিনে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করে। গত ২০ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ উচ্চপর্যায়ের এ তদন্ত কমিটি গঠন করে।
সাদাপাথরকাণ্ডে এবার পুলিশে রদবদল : সিলেটে সাদাপাথরকাণ্ডের মধ্যে পুলিশের ২২ সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানার ১১ এসআই ও এএসআই রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন ও প্রশাসন) রাসেলুর রহমান। তিনি বলেন, এটি নিয়মিত বদলিরই একটি অংশ।
সিলেটের ডিসি সারোয়ার আলম কালবেলাকে বলেন, ‘লুটের পাথর উদ্ধারে আমরা চিরুনি অভিযান শুরু করেছি। জৈন্তাপুরে পাথর মজুতের দায়ে ১ ব্যক্তিকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। লুটের পাথর উদ্ধারে আমাদের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।’