সান্টনারের বিধ্বংসী ব্যাটিংও ব্যর্থ, রোমাঞ্চকর ওয়েস্ট ইন্ডিজের

7 hours ago 5

রোমারিও শেফার্ডের ঠাণ্ডা মাথার শেষ ওভারের বোলিং, রস্টোন চেজের অলরাউন্ড ঝলক আর অধিনায়ক শাই হোপের দায়িত্বশীল ইনিংসে ভর করে নিউজিল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান। রোমারিও শেফার্ডের কাছ থেকে ১২ রান নিতে সক্ষম হলেন ২৮ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকা মিচেল সান্টনার। একটি ছক্কা এবং একটি বাউন্ডারি মারলেও সেটা কাজে আসেনি। ১২ রান নিতে সক্ষম হন তিনি। ফলে ৭ রানের শ্বাসরূদ্ধকর জয় পেলো ক্যারিবীয়রা।

অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে এই ম্যাচে ইতিহাস গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভেন্যুটিতে সর্বনিম্ন স্কোর (১৬৪ রান) রক্ষা করে জয় তুলে নিল তারা। তবে ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত উত্তেজনা ছড়িয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক মিচেল সান্টনার, যিনি ২৮ বলে অপরাজিত ৫৫ রানে প্রায় অসম্ভব এক প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডকে।

জয়ের জন্য ১৬৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চোটের কারণে জুলাই থেকে মাঠের বাইরে থাকা ম্যাথিউ ফোর্ড ফেরেন আগুনঝরা ফর্মে। নতুন বলে দারুণ সুইং করিয়ে ডেভন কনওয়ের স্টাম্প উড়িয়ে দেন তিনি।

New zealand cricket

প্রথম তিন ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ১ উইকেট তুলে নেওয়া ফোর্ডের স্পেল ছিল নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারদের জন্য দুঃস্বপ্নের। তবে ১৮তম ওভারে সান্টনারের ঝড়ে তার বোলিং ফিগার খানিকটা নষ্ট হয় (৪-০-৩২-১)।

৭০ রানে ২ উইকেট থেকে হঠাৎ ১০৭ রানে ৯ উইকেট! এক পর্যায়ে নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়েছিল নিউজিল্যান্ড; কিন্তু তখনই ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন অধিনায়ক মিচেল সান্টনার। মাত্র ২৮ বলে সাতটি চার ও একটি ছক্কায় গড়ে তোলেন অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংস। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান— প্রথম দুই বল ডট হলেও তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে আশা জাগান তিনি। কিন্তু শেফার্ডের ঠাণ্ডা মাথার বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি কিউইরা।

বাংলাদেশে সিরিজ জয়ের পর সম্পূর্ণ ভিন্ন কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ডে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার ব্যর্থতার শিকার হয়। ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দল। সেই অবস্থায় হাল ধরেন অধিনায়ক শাই হোপ।

প্রথমে ধীর গতিতে খেললেও ধীরে ধীরে গতি বাড়িয়ে ৩৯ বলে করেন ৫৩ রান, যেখানে ছিল তিনটি চার ও দুটি ছক্কা। তবে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই আউট হন তিনি। তাকে ভালো সাপোর্ট দেন রস্টোন চেজ (২১ বলে ২৯) ও রভম্যান পাওয়েল (২০ বলে ৩৩)।

চেজ ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পর বল হাতে ছিলেন আরও মারাত্মক। ছোট মাঠেও নিখুঁত লাইন-লেংথের ঘূর্ণিতে কুপোকাত করেন নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডারকে। ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। তিনিই পান ম্যাচসেরার পুরস্কার।

তার পাশাপাশি জাইডেন সিলস ৩ উইকেট নিয়ে সাপোর্ট দেন এবং শেফার্ড শেষ ওভারে অসাধারণ ঠাণ্ডা মাথায় ম্যাচটি শেষ করেন।

কিউই পেসার জ্যাকব ডাফি ছিলেন দুর্দান্ত। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। কাইল জেমিসন ও জাকারি ফকসও ভালো বোলিং করেন, যদিও ফকস ২ উইকেট পেলেও তার ওভারে রান উঠেছে বেশ। এ ম্যাচটি নিউজিল্যান্ডের জন্য ছিল কেন উইলিয়ামসনের অবসরের পর প্রথম টি২০ ম্যাচ, যা শুরুটা সুখকর হলো না।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেছে। সিরিজের দ্বিতীয় টি২০ অনুষ্ঠিত হবে শনিবার, ওয়েলিংটনে, যেখানে কিউইরা ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া থাকবে, আর ক্যারিবিয়ানরা চাইবে লিড দ্বিগুণ করতে।

আইএইচএস/

Read Entire Article