ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের দুই এজেন্ট—উৎপল পাল ও মো. আব্দুল আজিজ দোষ স্বীকার করেছেন।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
উৎপল পাল আরামিট পিএলসির এজিএম হলেও, দেশ-বিদেশে জাবেদের সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আব্দুল আজিজ সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোকাররম হোসাইন বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে কর্ণফুলী থানাধীন চরলক্ষ্যা শিকলবাহা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাবেদের গাড়িচালকের প্রতিবেশী ওসমানের বাড়ি থেকে ২৩ বস্তা নথি উদ্ধার করা হয়। উৎপল পালের কাছ থেকে জব্দ করা দুটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে।
মামলা ২৪ জুলাই দায়ের করা হয়। তদন্তে জানা গেছে, জাবেদ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের কর্মচারীকে নামসর্বস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক সাজিয়ে ঋণ গ্রহণের জালিয়াতি করেন। পরে ঋণ বিভিন্ন নামে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয় এবং টাকা বিদেশে পাচার করা হয়।
দুদকের টিম ১৭ সেপ্টেম্বর আব্দুল আজিজ ও উৎপল পালকে নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উৎপল পাল বিদেশে জাবেদের পরিবারের অর্থ পাচারের প্রধান দায়িত্বে ছিলেন, আর আব্দুল আজিজ সম্পদ ক্রয়-বিক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।
রিমান্ডে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২১ সেপ্টেম্বর ভোরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা এলাকার সিকদার বাড়ি থেকে ২৩ বস্তা নথিপত্র জব্দ করা হয়। এগুলো বিদেশে থাকা সম্পদের দলিল ও ভাড়া আদায়ের নথি হিসেবে মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত।
আদালত এরই মধ্যে জাবেদ ও তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি, ৩৪৩টি যুক্তরাজ্য, ২২৮টি সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ৯টি যুক্তরাষ্ট্রের স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং দেশের বাইরে থাকা ব্যাংক হিসাব, শেয়ার ও জমি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন।