সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাদের নামে প্রায় ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় পৃথক পৃথক সম্পদ বিবরণী নোটিশ পাঠিয়েছে দুদক।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, আব্দুর রাজ্জাকের নামে মোট ৬ কোটি ৭২ লাখ ৩৭ হাজার ২৯০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর বিপরীতে বৈধ আয়ের উৎস হিসেবে পাওয়া যায় ৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯১৬ টাকা। ফলে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭২ হাজার ৩৭৪ টাকা। এ বিষয়ে রেকর্ডপত্র ও জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদে যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। তার আয়কর রিটার্নেও প্রায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।
অন্যদিকে রাজ্জাকের স্ত্রী শিরিন আক্তার বানুর নামে ২ কোটি ৭৭ লাখ ৩০ হাজার ৫১১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদক। পারিবারিক ব্যয়সহ সবমিলিয়ে তার মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫০২ টাকা। বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া গেছে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬১২ টাকা। ফলে তার বিরুদ্ধে ৯০ লাখ ৭১ হাজার ৮৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে কমিশন মনে করছে।
এছাড়া আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের নামে ১ কোটি ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮২ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যয়সহ মোট সম্পদ দাঁড়ায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৩ টাকা। বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া যায় ৭৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৩ টাকা। তার বিরুদ্ধেও ৫১ লাখ ১২ হাজার ১০০ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ উঠেছে।
দুদক জানিয়েছে, রাজ্জাক পরিবারের সম্পদ বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির করা হয়েছে।
২০০১ সালে আব্দুর রাজ্জাক প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। মন্ত্রণালয় বিভক্ত হওয়ার পর ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ১৪ অক্টোবর আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এসএম/ইএ