সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ২৯টি জেলা। যার মধ্যে ঢাকা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুর ও যশোর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ তথ্য জানিয়েছে সম্প্রীতি যাত্রা নামের একটি নাগরিক সংগঠন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ‘মসজিদ, মন্দির, আখড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সম্প্রীতি যাত্রার ডাক এবং আসন্ন দুর্গাপূজায় ঝুঁকি পর্যালোচনা ও করণীয়’ শীর্ষক এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ফেরদৌস আরা রুবি, মাহা মির্জা, জামসেদ আনোয়ার তপন, মীর হুজাইফা প্রমুখ।
সংগঠনটি জানায়, গত ১০ বছরে (২০১৪-২০২৫) দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পূজামণ্ডপ, শোভাযাত্রার রুট এবং সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে- সেগুলো বিশ্লেষণ করে মোট ২৯ জেলাকে ঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এর মধ্যে ৫ জেলা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। সেগুলো হলো- ঢাকা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুর ও যশোর। এছাড়া ২৪ জেলা মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে।
দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে ঐতিহ্য- এর ওপর হামলার বিষয়ে সংগঠনটি জানায়, বাংলাদেশের ইতিহাস ও রাষ্ট্রচেতনার ভিত্তি গড়ে উঠেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সহাবস্থান এবং আধ্যাত্মিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর।
আরও পড়ুন
ধর্ষণচেষ্টার শিকার শিশু, হাসপাতালে অশালীন আচরণ চিকিৎসকের
বাংলাদেশসহ ৯ দেশের ওপর আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা
সম্প্রীতি যাত্রার মতে, আখড়া, বাউল আসর, দরগাহ ও সুফি মাজার যুগে যুগে মানুষের মন ও সমাজকে আলোকিত করেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে, এই ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রগুলো ক্রমাগত সহিংসতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
সংগঠনটি জানায়, এসব হামলা কোনো একক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। বরং বাংলাদেশের সামাজিক সংহতি ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলার ওপর সরাসরি আঘাত। সাম্প্রতিক হামলার পর্যালোচনা করে বলা হয়, পূজার প্রস্তুতির মধ্যেই মণিপুরে প্রতিমা ভাঙচুর এবং কুমিল্লায় চারটি মাজারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। রাজবাড়ীতে এক ব্যক্তির মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেছে।
গণমাধ্যমের তথ্যের রেফারেন্স দিয়ে জানানো হয়, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসেই ৮০টি মাজার ও দরগায় হামলা হয়েছে। সংখ্যালঘু, সুফি, বাউল এবং আদিবাসী- সব ধরনের প্রান্তিক গোষ্ঠী আজ একযোগে ঝুঁকির মুখে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়তি শঙ্কার কথা তুলে ধরে সংগঠনটি সতর্ক করে জানায়, নির্বাচনের আগমুহূর্তে সহিংসতার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ভোটের আগে-পরে সংখ্যালঘুদের আবাসিক এলাকা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় ও দরবারগুলো সহজে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
ইএআর/কেএসআর/এমএস