বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আমরা অস্বীকার করছি না যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রিন্সিপালগত মতপার্থক্য নেই। বিভিন্ন ছাত্ররাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই মতপার্থক্য থাকবে এইটা স্বাভাবিক। আর এটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিকগত সোন্দর্য। কিন্তু বাংলাদেশের মধ্যে অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব, বিদেশি আগ্রাসন এসব প্রশ্নে আমরা ইস্পাত সমান আমাদের ঐক্য বজায় থাকবে।
বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোট আয়োজিত 'বিপ্লবোত্তর ছাত্র ঐক্য' শীর্ষক আলোচনা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান তানভীরের সভাপতিত্বে ও জবিসাসের সাধারণ সম্পাদক মামুন শেখ ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফ সুবর্ণের সঞ্চালনায় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার বছরের পর বছর আমাদের শাসন এবং শোষণ করেছে। তারা দিল্লিকে কেবলা বানিয়ে ঢাকাকে শাসন করেছে। এখন কোনো ষড়যন্ত্রকেই সফল হতে দেয়া যাবে না কেননা এবার যদি আমরা ব্যর্থ হই তাহলে বাংলাদেশ আর কখনো ঘুরে দাড়াতে পারবে না।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ভারতের সাথে আমাদের কোনো ধমীয় কারণে সম্পর্কের অবনতি হয়নি। তাই যদি হতো তাহলে নেপাল হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তাদের সাথে ভারতের ভালো সম্পর্ক নেই। আমাদের মধ্যে যতসময় এক্য আছে তত সময় আমাদের মধ্যে কেউ বিভেদ তৈরী করতে পারবে না। আমাদের সামনের রাস্তা অতিক্রম করতে হলে এক্য রাখতে হব।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, এই জাতি যতদিন টিকে থাকবেন, ততদিন জুলাই অভ্যুত্থানের কথা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই বিজয় যেন চিরঞ্জীব থাকে, সেই দোয়া আল্লাহ তায়ালার কাছে করছি।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ছাত্র জনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা তাদের সকলের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমি নিজেও আজকে শহীদদের ত্যাগের বিনিময়ে এখানে আসতে পেরেছি। খুব আশা ছিল স্বৈরাচারের পতন কীভাবে হয়, আর তাদের পরিণতি কী ধরণের হয়, তা দেখার। আল্লাহ আমাকে তা দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক সাবিনা শরমীন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রইছ উদদীন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ড. বেলাল হোসেন ও শহীদ সাজিদের বোন ফারজানা হক।
এ ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের বিন ইয়ামিন মোল্লা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এবং অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এ সময় ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন ছাত্রনেতারা।