সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারসহ ৫ দফা দাবি

15 hours ago 4

বাংলা চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহ। তার হত্যার মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সালমান ভক্তরা। তারা প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছেন, মামলা দায়েরের ১১ দিন পার হলেও কেন এখনও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি।

সেইসঙ্গে মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে ৫ দফা দাবিও উত্থাপন করেছেন ভক্তরা।

আরও পড়ুন
সালমান শাহকে বড় ভাই ও সামিরাকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বললেন শাবনূর
‘সালমান শাহকে কেউ নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেননি’

মানববন্ধনে উপস্থিত সালমান শাহের ভক্ত-অনুরাগীরা হাতে পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড ধরে দাঁড়িয়ে ‘খুনিরা জেলে যাক, ছেলে হারা মায়ের ডাক’, ‘বিচার চাই, বিচার চাই, সালমান হত্যার বিচার চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

জামান নামের এক ভক্ত বলেন, ‘সালমান হত্যার মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা এখানে উপস্থিত। মামলা দায়েরের ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনো অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি। দেশে যারা আছেন, বিশেষ করে খলনায়ক ডন এবং সামিরা হককে আমরা প্রকাশ্যে দেখেছি। ডন কিছুদিন আগে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন, তিনি আমাদের সঙ্গে এবং তার পরিবারের সঙ্গে প্রেস ক্লাবে বসবেন। তাহলে কি প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে সালমানকে হত্যা করা হয়নি? আজ ডন কোথায়?’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘মামলার দুইদিন পর ডন ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘আমি দুই-তিনদিন পর আত্মসমর্পণ করব।’ তিনি বলেছিলেন, বাসাতেই আছেন। তাহলে কেন এখনও গ্রেফতার করা হয়নি?’

মানববন্ধনে ভক্তরা সামিরা হকের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এক ভক্ত বলেন, ‘সামিরা বারবার চ্যালেঞ্জ করছেন যে সালমান আত্মহত্যা করেছেন। ২৯ বছর পর যখন অপমৃত্যু মামলা হত্যা মামলায় রূপ নিয়েছে এখন তিনি পালাচ্ছেন কেন? তিনি কেন ভয় পাচ্ছেন?’

ভক্তবৃন্দদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে - প্রথমত পিবিআই প্রতিবেদনে যে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছিল তা পুনরায় খতিয়ে দেখতে হবে। র‍্যাবের তদন্ত স্থগিত করে কেন পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল? পিবিআইয়ের পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদনে যেই অসঙ্গতিগুলো ছিল তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান করতে হবে।

দ্বিতীয়ত মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। আসামিদের আত্মগোপন বা পলায়ন প্রমাণ করে তারা অপরাধী। নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি পালিয়ে থাকে না। মহামান্য হাইকোর্টের কাছে ভক্তবৃন্দের বিনীত আবেদন থাকছে যে, পালিয়ে থাকা আসামিরা যেন আগাম জামিন না পায়। তাহলে আইন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিদের আগাম জামিন দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

তৃতীয়ত আসামিদের অদৃশ্য পেশী শক্তির প্রভাবে ২৯টি বছর ধরে মামলাটি মিথ্যার মোড়কে আটকে ছিল। যা একটি দীর্ঘ সময়। তাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আর যেন বিলম্ব না হয় এরজন্যে দেশের চলমান আইনের নিয়মানুসারে হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থত বাংলাদেশ সরকারের কাছে সালমান শাহ ভক্তবৃন্দের আবেদন, বিদেশে পালিয়ে থাকা আসামিদের ইন্টারপোলের সহায়তায় খুঁজে বের করে গ্রেফতার করে দেশে এনে হত্যা মামলাটির বিচারকার্য অতি দ্রুত সম্পন্ন করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রাণের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

এবং পঞ্চমটি হলো ডিবি ও সিআইডি থেকে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করে কেন ভুল রিপোর্ট দেয়া হয়েছিল, সেটারও সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থানা-পুলিশ, সিআইডি, র‍্যাব ও পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা তদন্ত চালায়। সব প্রতিবেদনেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, সালমান শাহর পরিবারের আপত্তিতে প্রতি বারই তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন করা হয়।

মানবন্ধনে উপস্থিত ভক্তরা দ্রুত বিচার ও আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

এলআইএ/এএসএম

Read Entire Article