ম্যানচেস্টার সিটির দুর্গে দাঁড়িয়ে দাপুটে এক জয় তুলে নিল লিভারপুল। মোহাম্মদ সালাহর জাদুকরী গোল ও দুর্দান্ত অ্যাসিস্টে আর্নে স্লটের দল ২-০ ব্যবধানে হারালো সিটিজেনদের, শীর্ষস্থানে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করলো ১১ পয়েন্টের ব্যবধানে।
এটি কেবল একটি জয় নয়, এটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার দিকে লিভারপুলের দৃঢ় পদক্ষেপ! ২৭ ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ৬৪ পয়েন্ট, দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের চেয়ে ১১ পয়েন্ট এগিয়ে, যদিও গানারদের একটি ম্যাচ হাতে আছে। আর সিটি? পেপ গার্দিওলার দল এখন চতুর্থ স্থানে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকিট নিশ্চিত করাই যেন তাদের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে!
শুরুটা ছিল সিটির নিয়ন্ত্রণে। তারা ৬৬% বলের দখল ধরে রেখেছিল, তবে আক্রমণের ধার ছিল লিভারপুলের দিকেই। ১৪ মিনিটেই বাজল লাল শিবিরের প্রথম উল্লাস! কর্নার থেকে পাওয়া বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বজ্রগতির এক শট নেন সালাহ। নাথান আকের পায়ের ছোঁয়ায় বল দিক বদলে জালে জড়ালে হতভম্ভ হয়ে যান গোলরক্ষক এডারসন। এটাই ছিল তার চলতি লিগের ২৫তম গোল, শীর্ষ গোলদাতার আসন আরও দৃঢ় করলেন মিশরীয় এই তারকা।
৩৭ মিনিটে আরও একবার তাণ্ডব দেখালেন সালাহ। এবার গোলে নাম লেখালেন হাঙ্গেরিয়ান মিডফিল্ডার ডমিনিক সজোবাস্লাই। মাঝমাঠ থেকে প্রতিপক্ষের দুর্বল ডিফেন্সকে ভেঙে বল বাড়ান সালাহ, একেবারে ফাঁকায় দাঁড়ানো সজোবাস্লাই সহজেই বল পাঠান জালে। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে তখন নিস্তব্ধতা, হতাশায় মুখ ঢাকলেন গার্দিওলা।
এরপর আক্রমণে ছিল সিটি, কিন্তু ধার ছিল না। তাদের প্রধান গোলমেশিন আর্লিং হলান্ড ছিলেন না চোটের কারণে, আর তার অভাবটা ভালোভাবেই টের পেলেন গার্দিওলা। ওমর মারমুশ প্রথমার্ধে একবার দুর্দান্ত শটে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের পতাকা উড়ল, দ্বিতীয়ার্ধেও আরও একটি শট অল্পের জন্য পোস্ট মিস করে।
লিভারপুলের ডিফেন্স ছিল দুর্ভেদ্য, আর গোলরক্ষক কাইওহিন কেলেহারের কিছু অসাধারণ সেভ তাদের এগিয়ে রাখে। শেষ দিকে কার্টিস জোনস একটি গোল করলেও তা ভিএআর-এর মাধ্যমে বাতিল হয়। তবে লিভারপুলের জন্য তাতে কিছুই যায় আসে না—১১ পয়েন্টের বিশাল ব্যবধান নিয়ে তারা এখন গানারদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে।
সিটি সমর্থকরা হতাশায় স্টেডিয়াম ছাড়ছিলেন ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই। বিপরীতে লিভারপুল সমর্থকরা গলা ফাটিয়ে গাইলেন, "আমরা লিগ জিতব"—এমন দৃশ্য দেখা গেছে ২০১৯-২০ মৌসুমে তাদের শিরোপা জয়ের পথেও।
সালাহের অসাধারণ ফর্ম, সজোবাস্লাইয়ের প্রাণবন্ত পারফরম্যান্স, আর সিটির একের পর এক ভুল—সব মিলিয়ে এটা শুধু এক ম্যাচ নয়, এটি শিরোপার মহাসংকেতও!