সিঙ্গাপুরের অনাবাসী হাইকমিশনার ডেরেক লো ইউ-সে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, লজিস্টিকস এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা ও লজিস্টিক উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া পোশাকশিল্পে শ্রম সংক্রান্ত ইস্যু, মার্কিন শুল্ক ও পোশাকশিল্প সংক্রান্ত সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ পরিচালক রুমানা রশীদ। আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা।
বৈঠকে সিঙ্গাপুরের অনাবাসী হাইকমিশনরের সঙ্গে ছিলেন সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স মিচেল লি; সিঙ্গাপুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর কান্ট্রি অফিসার, সাউথ এশিয়া এন্ড সাব সাহারান আফ্রিকা ডাইরেকটরেট, টিএএল দায়ে আর্ন; এবং এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুরের ডেভলপমেন্ট পার্টনার, সাউথ এশিয়া, বেনজামিন চু।
সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার জানান, সিঙ্গাপুর সরকার বাংলাদেশের বে-টার্মিনালের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। বিশ্বব্যাপী কনটেইনার ট্র্যাফিক হ্যান্ডলিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিঙ্গাপুরের রয়েছে বিপুল অভিজ্ঞতা, উন্নত দক্ষতা এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এ সক্ষমতা ব্যবহার করে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের লজিস্টিকস ও বন্দর ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
হাইকমিশনার বন্দরের দক্ষতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে বিজিএমইএ সভাপতির কাছে মতামত জানতে চান।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, এ ধরনের যেকোনো সহযোগিতা বন্দর হ্যান্ডলিংয়ের সময় কমিয়ে আনতে, শিপিং প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করতে এবং আমদানি-রপ্তানি বানিজ্যে সামগ্রিক খরচ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আলোচনায় বন্দরের দক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বিজিএমইএর প্রত্যাশা তুলে ধরেন।
ডেরেক লো ইউ-সে জানান, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি (এফটিএ) প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে তারা বাংলাদেশের বর্তমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান।
বিজিএমইএ সভাপতি জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা তুলে ধরে বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষত ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ কমানো, দক্ষতা বাড়ানো এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মতো বিষয়গুলোতে বেশকিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারকে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিশীল খাতে বিনিয়োগের জন্য সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানোর অনুরোধ করেন।
হাইকমিশনারের মতপ্রকাশ করে বলেন, বিনিয়োগকারীদের শতভাগ মুনাফা প্রত্যাবসন (প্রফিট রিপ্যাট্রিয়েশন) নিশ্চিতকরণ বিনিয়োগ আকর্ষণের একটি পূর্বশর্ত। তিনি বিনিয়োগকারীদের জন্য শতভাগ মুনাফা প্রত্যাবসন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
বিজিএমইএ সভাপতি সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণে, বিশেষ করে কৃষিজাত পণ্য ও ফলমূল রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টিতে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের সহযোগিতা কামনা করেন।
বৈঠকে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার বিজিএমইএ নেতাদের সিঙ্গাপুরে পোশাক রপ্তানি বাড়াতে উচ্চ-মূল্য সংযোজিত পোশাক, বিশেষ করে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরির বিষয়ে পরামর্শ দেন।
এমকেআর/এএসএম