সিজারে সন্তান জন্মদানের পর নামাজ বন্ধ রাখতে হবে কি?

3 months ago 19

সন্তান জন্মদানের পর নারীদের যোনি থেকে যে রক্তস্রাব হয়, শরিয়তের পরিভাষায় তাকে নেফাস বলা হয়। সাধারণ ডেলিভারি পরবর্তী রক্তস্রাব যেমন নেফাস, সিজার পরবর্তী রক্তস্রাবও নেফাস গণ্য হয়। নেফাস চলাকালীন সময়ে যৌনমিলন, নামাজ, তাওয়াফ, রোজা, কোরআন তিলাওয়াত, কোরআন স্পর্শ করা নিষিদ্ধ। এ সময় জিকির করা যাবে, কোরআনে উল্লিখিত দোয়াসহ যে কোনো দোয়া পড়া যাবে। এ সময়ের নামাজের কাজা করতে হবে না, তবে রমজান মাস হলে রোজার কাজা করতে হবে।

নেফাস সর্বোচ্চ ৪০ দিন থাকতে পারে। এর সর্বনিম্ন সময়ের কোনো সীমা নেই; এক ঘণ্টা বা এক দিন পর নেফাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে আবার বিশ দিন বা ত্রিশ দিন পরও বন্ধ হতে পারে। নেফাসের রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে গোসল করে পবিত্র হতে হবে। তারপর যৌন-মিলন, নামাজ ও অন্যান্য আমল করতে পারবে। অর্থাৎ নেফাসের কারণে যে কাজগুলো নিষিদ্ধ হয়েছিল, সেগুলো নিষিদ্ধ থাকবে না। যৌনমিলনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকলে, চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ থাকলে তা মেনে চলতে হবে।

অনেকে মনে করে রক্তস্রাব থাকুক বা না থাকুক সন্তান জন্মদানের পর চল্লিশ দিন পর্যন্ত নামাজ পড়া যায় না। এ ধারণাটি সঠিক নয়। কারো রক্তস্রাব বন্ধ না হলে তার জন্য সর্বোচ্চ মেয়াদ হলো চল্লিশ দিন, এর আগে যে দিন বা যে সময় থেকে রক্তস্রাব বন্ধ হবে, সেদিন সে সময় থেকেই থেকে নামাজ পড়া শুরু করতে হবে।

সন্তান জন্ম নেওয়ার ৪০ দিন পরও যদি রক্তস্রাব বন্ধ না হয়, তাহলে তা আর নেফাস নয়, বরং ইস্তেহাজা বা রোগ মনে করতে হবে। ৪০ দিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর গোসল করে পবিত্র হয়ে যাবে এবং যৌনমিলন, নামাজ ও অন্যান্য আমল করতে পারবে। রক্তস্রাব চলতে থাকলে প্রতি ওয়াক্তে পরিচ্ছন্ন হয়ে, নতুন অজু করে নামাজ পড়বে, রোজাও রাখবে।

অসময়ে গর্ভপাত হলে করণীয়
দুর্ঘটনাবশত অসময়ে গর্ভপাত হলে ইচ্ছাকৃত গর্ভপাত করালে দেখতে হবে গর্ভের বাচ্চা মানবাকৃতি ধারণ করেছিল কি না। বাচ্চা যদি মানবাাকৃতি ধারণ করে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে যায়, তাহলে গর্ভপাত পরবর্তী রক্তপাত নেফাস গণ্য হবে। রক্তপাত বন্ধ হয়ে গেলে সে পবিত্র হয়ে যাবে। রক্তস্রাব অব্যাহত থাকলে ৪০ দিন পর্যন্ত নামাজ-রোজা থেকে বিরত থাকবে।

৪০ দিন পরও রক্তস্রাব অব্যাহত থাকলে তা অসুস্থতা গণ্য হবে। এ সময় তিনি প্রতি ওয়াক্তে পরিচ্ছন্ন হয়ে নতুন অজু করে নামাজ আদায় করবে, রোজাও রাখবে।

গর্ভের বাচ্চা যদি মানবাকৃতি ধারণ না করে, কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত না হয়, গর্ভপাতের আগে ১৫ দিন ওই নারী রক্তস্রাবমুক্ত থেকে থাকে এবং গর্ভপাতের পর রক্তস্রাব ৩ দিনের বেশি অব্যাহত থাকে, তাহলে তা ১০ দিন পর্যন্ত হায়েজ গণ্য হবে।

১০ দিনের পরও রক্তস্রাব অব্যাহত থাকলে তা অসুস্থতা গণ্য হবে। এ সময় তিনি প্রতি ওয়াক্তে পরিচ্ছন্ন হয়ে নতুন অজু করে নামাজ আদায় করবে, রোজাও রাখবে।

ওএফএফ/এমএস

Read Entire Article