ক্যাথরিন বিগেলোর নতুন সিনেমা ‘অ্যা হাউজ অব ডিনামাইট’ দর্শকদের এক ভয়ানক বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়েছে। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে, একটি অজানা উৎস থেকে লঞ্চ করা পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের হাতে রয়েছে মাত্র ২০ মিনিট সময়। এই অল্প সময়ে তিনি আসলে কীভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবেন?
গল্পে ফুটে উঠেছে, একটি নিউক্লিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং চরিত্রদের হাতে মাত্র অল্প কিছু মিনিট সময় আছে। এই সময়সীমা বাস্তবের ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবিধির উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে। ছবিতে হোয়াইট হাউসের ভিতরের প্রোটোকল, বিশৃঙ্খলা এবং নৈতিক দ্বন্দ্ব অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে ইদ্রিস এলবা মার্কিন প্রেসিডেন্টের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। রেবেকা ফেরগুসনকে দেখা যাবে সিচুয়েশন রুমের উপদেষ্টা হিসেবে। ছবিটি মুক্তির দুদিনেই বেশ নজর কেড়েছে দর্শকে। এটি ট্রেন্ডে রয়েছে।
সিনেমাটি যদিও কাল্পনিক কিন্তু পরিচালক বিগেলোর আগের যুদ্ধভিত্তিক ছবির মতোই এটি বাস্তবসম্মত এবং চিন্তার খুরাক দিচ্ছে।
বিগেলো এবং স্ক্রিনরাইটার নোয়া ওপেনহাইম সিনেমার কাঠামো এমনভাবে সাজিয়েছেন যাতে দেখানো যায়, সংক্ষিপ্ত সময়সীমায় মানবিক সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ কতটা বড়। তারা সিনেমায় দেখিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট এবং মিলিটারি স্টাফরা সম্পূর্ণ প্রফেশনাল। কিন্তু তবুও সিস্টেমের জটিলতা এবং সময়ের সীমাবদ্ধতা মানুষকে চরম চাপে ফেলে দেয়।
নোয়া ওপেনহাইম বলেন, ‘মানুষ সবসময় চেষ্টা করে যেন অগোছালো পরিস্থিতিতে নিয়ম ও প্রক্রিয়া মেনে সব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু তবুও ভুল হয়ে যায়। আর সবচেয়ে ছোট ভুলটাও তখন বিশাল বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। সেটাই আমরা এই সিনেমার গল্পে বলেছি। পারমানবিক যুদ্ধ ঠেকাতে অনেক প্রস্তুতি থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। যে কোনো মূহূর্তেই এই যুদ্ধটা শুরু হতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিচ্ছি।’
ছবিতে দেখানো হয়েছে, সংক্ষিপ্ত সময়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়া, সঠিক তথ্য যাচাই করা এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালানো কতটা জটিল। ওপেনহাইম বলেন, ‘যদিও সবকিছু সর্বোত্তমভাবে পরিকল্পিত তবুও ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সবসময় সম্ভব হয় না।’
এছাড়াও ছবিটি বিশ্বের পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি এবং নতুন ধরণের হুমকি নিয়েও বার্তা দেয়। এই সিনেমাটি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ টম নিকোলস মার্কিন এক গণমাধ্যমে বলেন, ‘সবার উচিত পারমাণবিক হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। এটি শুধু সিনেমার কল্পনা নয়, বাস্তবও।’
সবশেষে বলা চলে, ‘হাউজ অব ডিনামাইট’ সিনেমা একটি শক্তিশালী সতর্কবাণী। এটি দেখায়, মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের সিদ্ধান্ত এক বা দু’জন মানুষের হাতে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। এর জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত চিন্তা, নিয়ন্ত্রণ। সিনেমা শেষ হওয়ার পর দর্শকরা একান্তই ভাবতে বাধ্য হয়, বিশ্ববাসী কি সত্যিই পারমাণবিক হুমকি থেকে নিরাপদ?
এলআইএ/জিকেএস

3 hours ago
5









English (US) ·