সিরাজগঞ্জে এবারও হোঁচটের শঙ্কায় ধান সংগ্রহ

3 months ago 42

সিরাজগঞ্জে এবারও ধান সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত দুই বছরও এ জেলায় বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহ ছিল শূন্যের কোঠায়।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ৬৭ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। যদিও জেলার নয়টি উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯১৬ মেট্রিক টন। গত দুই বছরের মতো এবারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ মে থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্টের মধ্যে এই মৌসুমের ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শেষ করার কথা রয়েছে। ধান বিক্রির জন্য বিভিন্ন নিয়ম-কানুন ও হয়রানির কারণে সরকারিভাবে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে খাদ্য বিভাগ বলছে ধান সংগ্রহের অবশিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টা করবেন তারা।

জেলা খাদ্য বিভাগ জানায়, এ অর্থবছরে জেলায় ৮ হাজার ৯১৬ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ৮৯৮ টন, উল্লাপাড়ায় ১ হাজার ৯১৮ টন, শাহজাদপুরে ১ হাজার ৪৩০ টন, রায়গঞ্জ ১ হাজার ২৫২ টন, তাড়াশ ১ হাজার ৪১১ টন, বেলকুচি ৫৫৯ টন, কাজীপুর ৮১৯ টন, কামারখন্দ ৪৪১ টন ও চৌহালী উপজেলায় ১৮৮ টন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, এই মৌসুমে সিরাজগঞ্জে এক লাখ ৪১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ১৭৫ হেক্টর বেশি। এতে প্রায় ৬ লাখ ১৪ হাজার ৫৩ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মমিন জাগো নিউজকে বলেন, সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে নাকি আবেদন করতে হবে। এসব বুঝি না, তাই ধানের দাম কম পেলেও আগেই বিক্রি করে দিয়েছি।

রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষক আকবর আলী জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর প্রায় ৬০ মণ ধান পেয়েছি। বছরের খোরাক রেখে সব হাটেই বিক্রি করেছি। শুনেছি সরকারি গুদামে ১ হাজার ২৮০ টাকা মণ বিক্রি করা যায়। কিন্তু কীভাবে বিক্রি করবো, আমরা তো ওই নিয়ম জানি না।

নাম না প্রকাশের শর্তে রায়গঞ্জ উপজেলার এক কৃষিবিদ জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে বেশিরভাগ কৃষকের তালিকা হয় ব্যক্তি সম্পর্ক ও রাজনৈতিক বিবেচনায়। যারা কৃষক হিসেবে তালিকাভুক্ত হন, তাদেরও ধান বিক্রয় করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া ধান সংগ্রহ কার্যক্রমে প্রকৃত কৃষকদের অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারের প্রচার-প্রচারণারও অভাব রয়েছে। এসব কারণে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় না।

তবে এবার ধান সংগ্রহে হোঁচট খাওয়ার শঙ্কা নেই দাবি করে সিরাজগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রিয়াজুর রহমান রাজু জাগো নিউজকে বলেন, জেলার চারটি উপজেলায় কৃষকের অ্যাপস ও বাকি পাঁচ উপজেলায় লটারির মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে বিগত বছরের চেয়ে এবার ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে তিনি দাবি করেন।

এফএ/এমএস

Read Entire Article