সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ফরাসি চরমপন্থিদের একটি শিবির ঘিরে অভিযান শুরু করেছে দেশটির সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী। ফরাসি সরকারের চাহিদা অনুযায়ী এসব যোদ্ধাকে আটক করতেই এ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সিরিয়ার সরকারি সূত্র জানিয়েছে, চলমান অভিযানে ফরাসি চরমপন্থিদের অবস্থান করা ওই শিবিরটি এখন পুরোপুরি ঘেরাও করা হয়েছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, ফরাসি সরকারের কাছে ওয়ারেন্টভুক্ত ফরাসি যোদ্ধাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে একটি বৃহৎ অভিযান শুরু হয়েছে।
এদিকে, শিবিরে অবস্থানরত জিবরিল আল-মুহাজির নামে পরিচিত চরমপন্থির ছেলে জানিয়েছেন, মধ্যরাতের পর থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে ও এখনো লড়াই চলছে। মুহাজির আরও দাবি করেছেন, ফরাসি সরকার ওই গোষ্ঠীর দুই নাগরিককে সিরীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার দাবি জানিয়েছে।
বিদেশি যোদ্ধাদের এই গোষ্ঠীটির নাম ‘ফিরকাতুল গুরাবা’, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ওমর ওমসেন, যিনি ওমর দিয়াবি নামেও পরিচিত। একসময় ফ্রান্স-সেনেগাল বংশোদ্ভূত এই অপরাধী এখন চরমপন্থি প্রচারক হিসেবে পরিচিত।
সিরীয় বাহিনীর অভিযানটি শুরু হয়, যখন অভিযোগ ওঠে যে ওই চরমপন্থি এক কিশোরীকে অপহরণ করেছেন ও আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেনারেল ঘাসান বাকির এক বিবৃতিতে বলেন, সরকারি বাহিনী তুর্কি সীমান্তের কাছে অবস্থিত শিবিরটি পুরোপুরি ঘিরে ফেলেছে, যেখানে ওই চরমপন্থি লুকিয়ে রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে দিয়াবিকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি ফরাসি ভাষাভাষী যোদ্ধাদের সিরিয়ায় পাঠানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ও ফ্রান্সেও তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোরের সন্ত্রাসবাদবিষয়ক বিশ্লেষক ওয়াসিম নাসর এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে জানিয়েছেন, সিরীয় বাহিনী প্রথমে শিবিরে অবস্থানরত যোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। ওমসেনের দল এখন সিরিয়ায় অবস্থানরত সব বিদেশি যোদ্ধাকে সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছে।
হারেম অঞ্চলের এক বাসিন্দা জানান, মঙ্গলবার থেকেই তিনি ওই এলাকায় সরকারি বাহিনীর অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন লক্ষ্য করেছেন এবং রাতভর বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
ফরাসি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, প্রায় ৫০ জন যোদ্ধা এই গোষ্ঠীর সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন থেকেই শুরু হয় সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ, যাতে এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারো ব্যক্তি সেই সময় সিরিয়ায় গিয়ে জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটির নতুন ইসলামপন্থি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দিয়াবির গোষ্ঠীর সম্পর্কও এখন তিক্ত হয়ে উঠেছে।
সূত্র: এএফপি
এসএএইচ

1 day ago
9









English (US) ·