সিলেটে পাথর ভাঙার মিলের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। এবার গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে ৬৭ ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। অভিযানে নেতৃত্ব দেন গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী।
এর আগে মঙ্গলবার সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুলে ৩৩টি ক্রাশার মেশিনের বৈদ্যুতিক মিটার বিচ্ছিন্ন ও জব্দ করা হয়। এর আগের দিন সোমবার একই এলাকায় ৩০টি ও জৈন্তাপুর এলাকায় পাঁচটি অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মিটার জব্দ করে টাস্কফোর্স।
এর ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুর ১২টায় গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পাথর কোয়ারি এলাকায় পাথর ভাঙার ক্রাশার মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান শুরু করে টাস্কফোর্স। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিদ্যুৎ বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের এ অভিযান চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত
অভিযানে সহায়তা করেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মো. তোফায়েল আহমদ, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিদর্শক মামুনুর রশিদ, প্রকৌশলী (পিডিবি) সজল চাকলাদার, বিজিবির সংগ্রাম বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার শহিদুল ইসলাম ও বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার মো. বিপ্লব হোসেন।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বলেন, অবৈধ স্থাপনা ও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান চলমান থাকবে। কোনোভাবে আইন অমান্যকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে সিলেটের বন্ধ পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়া ও ক্রাশার মিল মালিকদের হয়রানি বন্ধ করে ব্যবসা সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সিলেট জেলা পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে সিলেট নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির মুখপাত্র শাব্বির আহমেদ ফয়েজ।
এসময় তিনি পাথর সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে পাথর কোয়ারি ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা, ট্রাক শ্রমিকদের তল্লাশির নামে হয়রানি ও পুলিশের নির্যাতন বন্ধ করা এবং ক্রাশার মিল মালিকদের হয়রানি বন্ধ করে ব্যবসা সুযোগ করে দেওয়ার তিন দফা দাবি জানান। দাবি বাস্তবায়ন না হলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গত শনিবার জাফলংয়ে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) এলাকা পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। এসময় তারা পাথর উত্তোলন ও পরিবেশ বিনষ্টকারী কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এসময় জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, পাথর উত্তোলন না হলে এসব ক্রাশারে পাথর আসছে কোথা থেকে? আমদানি করা পাথর হলে তা নির্দিষ্ট এলাকায় থাকার কথা। তাই বিদ্যুৎ ক্রাশার মিলগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেন তিনি।
আহমেদ জামিল/আরএইচ/জিকেএস