সিলেটে ভাঙা হল শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল
সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে শহরের কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা বুলডোজার নিয়ে ম্যুরালটি গুড়িয়ে দেয়। এরপর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, বিএনপি ও ছাত্রদলের সদস্যরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ঘোষিত কর্মসূচির প্রতিবাদ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা মিছিলসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে পৌঁছে ম্যুরালটি ভেঙে দেয়। এ সময়, আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেয়, যার মধ্যে ছিল ‘গুড়িয়ে দাও-গুড়িয়ে দাও’, ‘মুজিববাদ আস্তানা গুড়িয়ে দাও’ এবং ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা শাখার মুখপাত্র মালেকা খাতুন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে সমর্থনকারী কোনো স্মৃতিচিহ্ন এখানে থাকতে পারে না। তারা দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে, গণহত্যাকারী ও ফ্যাসিবাদের চিহ্ন আমাদের সহ্য করা হবে না।’
এদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) রাত ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলে। এর পর রাত ২ টার দিকে নগরীর মদিনা মার্কেটে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এর আগে, শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণা আসার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তারা বলেন, শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্য দিলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে।
বুধবার বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। রাত ৮টায় শাহবাগ থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল, তবে বিকেল থেকেই সেখানে ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকে। সন্ধ্যার পর, সেখানে ব্যাপক জনসমাগম হয় এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী স্লোগান শোনা যায়।
একপর্যায়ে উত্তেজিত ছাত্ররা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। এর ফলে, আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া জনতা দাবি করেন, ‘এ বাড়ি স্বৈরাচারের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত, আজ এ চিহ্ন মুছে ফেলা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি।’ পরে সন্ধ্যায় ফেইসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।’