সিলেটের জনপ্রিয় তিন স্পটে গিয়ে যা যা দেখবেন

2 months ago 22

মোহাম্মদ মারুফ মজুমদার

‘চিত্ত হিয়ায় বাজিছে আজি নিত্য কলতান’ বৃষ্টিস্নাত সিলেটের সৌন্দর্য দেখতে এখন অনেকেই ছুটছেন সেখানকার জনপ্রিয় সব দর্শনীয় স্থানে। সিলেট এখন রং-রূপ ও রসে টইটম্বুর।

সিলেট ভ্রমণেই আপনি একসঙ্গে উপভোগ করতে পারবেন পাথর, পানি, পাহাড়সহ চা বাগানের নজরকাড়া সৌন্দর্য। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক সিলেটের জনপ্রিয় তিন স্পটের খুঁটিনাটি-

সাদা পাথর

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাথর কোয়ারি অঞ্চল হচ্ছে ভোলাগঞ্জ। সাদা পাথর হচ্ছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ভারতের মেঘালয়ের কোলে ভোলাগঞ্জে অবস্থিত। ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্ট বা সাদা পাথর হলো ধলাই নদীর উৎসমুখের পাথরবেষ্টিত এক স্থান।

সিলেটের জনপ্রিয় তিন স্পটে গিয়ে যা যা দেখবেন

বাংলাদেশে প্রবেশের পর এই ধলাই নদী দুটি ভাগে ভাগ হয়ে মাঝে ভোলাগঞ্জকে ঘিরে পরে আবার মিলিত হয়েছে। ফলে সমগ্র এলাকাটি অনেকটা ব-দ্বীপের মতো দেখতে।

পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনার স্রোত মিশেছে ধলাই নদীতে। স্বচ্ছ-সাফেদ পানিতে গা এলিয়ে স্রোতে ভেসে আপনি এখানে উপভোগ করতে পারবেন সবুজ পাহাড় আর সাদা মেঘের আনাগোনা।

এই নদীর স্রোতে ভেসে আসা পাথর উত্তোলনের কাজে মগ্ন স্থানীয়দের ব্যস্ততা দেখে কেটে যাবে অনেকটা সময়। ছোট নৌকায় করে পাথর সংগ্রহ করা এখানে বহু মানুষের জীবিকা। এছাড়া ভোলাগঞ্জ সীমান্তের ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশে চুনাপাথর আমদানী করা হয়।

আরও পড়ুন

এখানে শত শত ট্রাকে চুনাপাথরবাহী ট্রাক নজরে পড়বে। সাদাপাথরের কাছেই আছে উৎমাছড়া, তুরুংছড়া নামের চমৎকার দুটি জায়গা। তবে বর্ষাকাল ছাড়া এখানে তেমন পানি থাকে না, তাই সেখানে যাওয়ার এখনই মোক্ষম সময়।

সিলেটের জনপ্রিয় তিন স্পটে গিয়ে যা যা দেখবেন

রাতারগুল

বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির ‘ফ্রেশওয়াটার সোয়াম্প ফরস্টে’ বা জলাবন হলো রাতারগুল। তরুলতায় ঘেরা সবুজ প্রকৃতি তার সবটুকু মায়া দিয়ে পূর্ণ করেছে এই রাতারগুল। বাংলার আমাজন নামেও পরিচিত স্থানটি।

সিলেটের সীমান্তর্বতী উপজেলা গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বনটি। সিলেট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরত্বে রাতারগুলের অবস্থান। বনটির আয়তন ৩ হাজার ৩২৫ দশমিক ৬১ একর। এর মধ্যে ৫০৪ একর অঞ্চলকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণীদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

সিলেটের জনপ্রিয় তিন স্পটে গিয়ে যা যা দেখবেন

বর্ষায় এ বনের গাছগাছালির বেশিরভাগ অংশই পানির নিচে থাকে। সে সময় এই বন ২০-৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। ছোট ডিঙি নৌকায় করে বনে ঘোরা যায়। মাঝে মধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ফোঁটা নিস্তব্ধ এ বনের প্রকৃতিকে করে তোলে আরও রঙিন। রাতারগুলের অনিন্দ্যসুন্দর এই রূপটাই পর্যটকদের টেনে নিয়ে আসে দূর-দূরান্ত থেকে।

জাফলং

সারিবদ্ধ চা বাগান, চারদিকে সবুজের সমারোহ, উঁচু-নিচু পাহাড়ের টিলা, গহীন অরণ্য, ঝরনাধারা, খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়, পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা পিয়াইন নদের স্বচ্ছ পানির ধারা, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, উঁচু পাহাড়ে সাদা মেঘের খেলা এ সবই সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত জাফলংকে করেছে অনন্য। এক জাফলং ভ্রমণেই আপনি এতকিছু দেখার সুযোগ পাবেন।

জেএমএস/এএসএম

Read Entire Article