সীমান্তে বিএসএফের হামলার প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ

13 hours ago 2

বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ভারতের সীমান্তে বাংলাদেশিদের ওপর বিএসএফের হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট থেকে আগ্রাসী বিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বুদ্ধিজীবী চত্বরে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘বিএসএফ হামলা করে, বিজিবি কী করে, সীমান্তে হামলা হলে, জবাব দিবে বাংলাদেশ, দিল্লির আগ্রাসন, রুখে জনগণ, দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা, জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিজিবির প্রত্যক্ষ মদদে ভারতীয় মাফিয়া বাহিনী এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনগণ আজকের হামলা চালিয়েছে। দেশের বর্তমান সরকার এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়েও দেখা গেছে। গত ৫০ বছরে সীমান্তে যত হত্যা হয়েছে সবগুলোর বিচার করতে হবে। বিচার না করতে পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারতীয় আধিপত্যের নমুনা দেখতে পাচ্ছি বারবার। ফেলানী থেকে শুরু করে জয়ন্ত দাস হত্যা পর্যন্ত প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডে ভারত আমাদের ওপর আধিপত্যের পরিচয় দিয়েছে। আমরা ভারতীয় জনগণের শত্রু নই, আমাদের লড়াই ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যের বিরুদ্ধে। আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের বর্তমান সরকার এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যেটা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ে আমরা দেখেছি। অন্তর্বর্তী সরকারকে স্পষ্ট বলে দিতে চাই ভারতীয় হাইকমিশনের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের জবাব চাইতে হবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান মারুফ বলেন, আমরা মনে করি বিএসএফের প্রত্যক্ষ মদদে ভারতীয় মাফিয়া বাহিনী এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনগণ আজকের হামলা চালিয়েছে। আমরা ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই আমরা কখনও দিল্লির আগ্রাসন মানব না। আমরা বারবার দেখেছি তারা সীমান্তে হত্যা চালিয়েছে, আমার দেশের মানুষকে কীভাবে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ফেলানীকে দেখেছি তার লাশ ঝুলে ছিল। আমাদের চোখের সামনে এখনো ফেলানীর লাশ ঝুলে। ফেলানীর লাশের হিসাব বাংলাদেশকে দিতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে যে আধিপত্যবাদ শুরু করেছে, আমাদের দেশের অবিভক্ত নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিসাব তারা দিচ্ছে না। আমরা বলে দিতে চাই, পিন্ডির জিঞ্জির ছেড়েছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাই অতিদ্রুত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এর জবাব চাইতে হবে।

ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তাদের দীর্ঘদিনের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে চায়। বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর থেকেই ভারত বিশৃঙ্খলার চক্রান্ত শুরু করেছে। ৫ আগস্টের পর তারা পলাতক হাসিনাকে ফিরিয়ে না দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করেছে। সাম্প্রদায়িক লড়াইকে বড় করে দেখিয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দ্রুত সময়ে ভারতীয় হাইকমান্ডকে ডেকে এর জবাব চাইতে হবে। গত ৫০ বছরে সীমান্তে যত হত্যা হয়েছে সবগুলোর বিচার করতে হবে। বিচার না করতে পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।

সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আল শাহরিয়া শুভ। এ সময় বামপন্থি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Read Entire Article