মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে বিএসএফকে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সীমান্তে বিএসএফের বেড়া স্থাপনের বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছে বিজিবি।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার।
সফরকারী বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের বরাতে একটি সূত্র জানায়, সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিচারে ঢাকার আপত্তি নেই। তবে হত্যা কোনোভাবেই ন্যায্য নয় বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বৈঠকে সীমান্ত হত্যাকে বাংলাদেশের জন্য সংবেদনশীল বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জবাবে বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএসএফ গুলি না চালানোর চেষ্টা করলেও, এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যখন সংগঠিত সশস্ত্র অপরাধীরা আক্রমণাত্মক হয় এবং তখন আত্মরক্ষার আর কোনো বিকল্প থাকে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত উভয় পক্ষের সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় প্রতিনিধি দল বলেছে যে সীমান্তের অপরাধ বন্ধ করতে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রয়োজন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএসএফ এবং বিজিবির মহাপরিচালক পর্যায়ের এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।
বৈঠকে বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং বিএসএফ দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিএসএফ মহাপরিচালক দলজিত সিং চৌধুরী।
বৈঠকে সীমান্তে বিএসএফের সীমান্ত বেড়া নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিএসএফের দাবি, দুই দেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে এবং বিজিবিকে দুই দেশের এ সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।
পাল্টা যুক্তি দিয়ে বিজিবি বলেছে, উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী বেড়া নির্মাণের আগে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের যৌথ জরিপ করা উচিত, যেন কোথায় ও কীভাবে বেড়া স্থাপন করা হবে, তা নির্ধারণ করা যায়। কিছু ক্ষেত্রে সেই সমঝোতা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এ ধরনের একতরফা সিদ্ধান্তে বিজিবি আপত্তি জানায়।
বৈঠকে ফেনসিডিল, ইয়াবা, অস্ত্র ও অন্যান্য মাদক চোরাকারবারসহ সীমান্তের অপরাধ রোধের ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকের পরিবেশ ছিল 'বন্ধুত্বপূর্ণ'। তবে আলোচনার মধ্যে সংবেদনশীল দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো 'স্পষ্ট'ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বিএসএফ আজ ১৪ সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধি দলের সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেছে।