সুদানে যুদ্ধাপরাধ করছে আরএসএফ, অভিযোগ অ্যামনেস্টির
সুদানে দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ করছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, এল-ফাশের এলাকায় আরএসএফ যোদ্ধারা নিরস্ত্র মানুষদের গুলি করে হত্যা, ধর্ষণ ও বেসামরিক মানুষের ওপর নৃশংস হামলার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন চালাচ্ছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা আগে আরএসএফ ঘোষণা দেয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অবিলম্বে তিন মাসের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে যাবে। আরও পড়ুন>>সুদানের মাটিতে গণহত্যার চিহ্ন, আকাশ থেকে দেখা যায় রক্তের দাগসুদানে ‘গণহত্যা’: ৩ দিনে আরএসএফের হাতে নিহত দেড় হাজার মানুষসুদানে ‘গণহত্যা’র প্রমাণ লুকাতে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলছে আরএসএফ ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদান ভয়াবহ সংঘাতের মধ্যে রয়েছে। সে সময় দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র লড়াইয়ে রূপ নেয়। অ্যামনেস্টি জানায়, তারা এল-ফাশের থেকে পালানো ২৮ জন বেঁচে ফেরা
সুদানে দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ করছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, এল-ফাশের এলাকায় আরএসএফ যোদ্ধারা নিরস্ত্র মানুষদের গুলি করে হত্যা, ধর্ষণ ও বেসামরিক মানুষের ওপর নৃশংস হামলার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন চালাচ্ছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা আগে আরএসএফ ঘোষণা দেয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অবিলম্বে তিন মাসের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে যাবে।
আরও পড়ুন>>
সুদানের মাটিতে গণহত্যার চিহ্ন, আকাশ থেকে দেখা যায় রক্তের দাগ
সুদানে ‘গণহত্যা’: ৩ দিনে আরএসএফের হাতে নিহত দেড় হাজার মানুষ
সুদানে ‘গণহত্যা’র প্রমাণ লুকাতে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলছে আরএসএফ
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদান ভয়াবহ সংঘাতের মধ্যে রয়েছে। সে সময় দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র লড়াইয়ে রূপ নেয়।
অ্যামনেস্টি জানায়, তারা এল-ফাশের থেকে পালানো ২৮ জন বেঁচে ফেরা মানুষের সাক্ষ্য সংগ্রহ করেছে। এসব সাক্ষ্যে বলা হয়েছে, পালিয়ে যাওয়ার পথে আরএসএফ যোদ্ধারা নারীদের ধর্ষণ করেছে, নিরস্ত্র পুরুষদের হত্যা করেছে এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গুলি করেছে।
অ্যামনেস্টির প্রধান অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে এই ধারাবাহিক ও ব্যাপক সহিংসতা যুদ্ধাপরাধ এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনের অন্যান্য অপরাধের মধ্যেও পড়ে। দায়ীদের অবশ্যই জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে।
দারফুর অঞ্চলের এই যুদ্ধে সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের বাহিনী লড়ছে তার সাবেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোহাম্মদ দাগলোর নেতৃত্বাধীন আরএসএফের বিরুদ্ধে।
গত অক্টোবরের শেষের দিকে এল-ফাশের শহরটি আরএসএফ সম্পূর্ণভাবে দখল করে নেয়। জাতিসংঘের সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার গত সপ্তাহে বলেছেন, এল-ফাশের এখন ‘অপরাধের শহর’ এবং এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে এল-ফাশের থেকে পালানো এক নারী জানান, তাকে ও তার ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে আরএসএফ সদস্যরা ধর্ষণ করে। পালিয়ে তাওইলা শরণার্থী শহরে পৌঁছানোর পর তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে ক্লিনিকে মারা যায়।
আরেকজন বেঁচে ফেরা ব্যক্তি বলেন, আরএসএফ মানুষদের মাছির মতো মেরে ফেলছিল। এটি ছিল একটি হত্যাযজ্ঞ। আমি যে মানুষগুলোকে মরতে দেখেছি, তাদের কেউই সশস্ত্র ছিল না।
এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা সুদানে কোনো ফল আনতে পারেনি। কারণ উভয় পক্ষই আলোচনা শুরু হওয়ার আগে সামরিকভাবে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে চাইছে।
গত রোববার সেনাপ্রধান বুরহান যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমন্বয়ে গঠিত ‘কোয়াড গ্রুপ’-এর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ‘খারাপ ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি দাবি করেন, আমিরাত যেহেতু আরএসএফকে সমর্থন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে, তাই এই প্রস্তাব নিরপেক্ষ হতে পারে না।
আমিরাত সবসময়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। সোমবার তারা বরং বুরহানের বিরুদ্ধে ‘সহায়তা প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার আচরণের’ অভিযোগ তুলেছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/
What's Your Reaction?