সুনামগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিং নিয়োগকে কেন্দ্রে করে ঘুষ বাণিজ্য ও চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৫ জুলাই) দুপুর ২টায় এসব অভিযোগ তুলে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৫-৬ বছর ধরে হাসপাতালের বিভিন্ন আউটসোর্সিং পদে চাকরি করে আসছিলেন তারা। পরে সরকারের আমলে তাদের নিয়োগ দেওয়া হলেও হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক মাহবুবুর রহমান স্বপন স্টাফদের কাছ থেকে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ঘুষ দাবি করেন।
তারা জানান, ঘুষের দাবির বিরুদ্ধে তারা আন্দোলনে নামলে, প্রশাসনের সহায়তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশ দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে অনেকে আহত হন এবং চাকরি হারানোর ভয়েও পড়েন।
পরে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও 'বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন'-এর আহ্বায়কসহ বিভিন্ন মহল মধ্যস্থতায় বসে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। সেসময় জানানো হয়, যখন নতুন নিয়োগ হবে, তখন পুরনো কর্মীদেরকেই বিনা ঘুষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে টেন্ডার শেষ হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, টাকা ছাড়া কোনো নিয়োগ হচ্ছে না।
আবির নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি টাকা দেওয়ার পরেও চাকরি পাইনি। এখন টাকা ফেরত চাইলে হুমকি দিচ্ছে।’
চাকরিপ্রার্থী তৌহিদ জানান, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে এখানে কাজ করেছি। এখন নতুন করে নিয়োগে আমাদের টাকা দিতে বলা হচ্ছে। আমি ধার দেনা করে ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি অথচ আমার চাকরি হলো না। এখন টাকা ফেরতও দিচ্ছে না।’
সোহেল বলেন, ‘আমি ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। বলা হয়েছিল চাকরি হবে। এখন বলছে তালিকায় নাম নেই। টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো মামলার ভয় দেখাচ্ছে।’
শামসুন্নাহার বলেন, ‘নারী হিসেবে আমরা আরও বেশি বিপদে আছি। চাকরির জন্য ধারদেনা করেছি। এখন পরিবারে যেতে পারছি না, সমাজেও মুখ দেখাতে পারছি না।’
ইমরান, সুরাইয়া, শুকলা, রাজীবসহ অন্যান্য ভুক্তভোগীরাও একই অভিযোগ তুলে ধরে অবিলম্বে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল, ঘুষ লেনদেনের সুষ্ঠু তদন্ত, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং যারা টাকা দিয়েও চাকরি পাননি, তাদের পুনর্বহালের দাবি জানান।
লিপসন আহমেদ/আরএইচ/এএসএম