সুন্দর সামাজিক আচরণও ইবাদত
মুফতি ইফতেখারুল হক হাসনাইন ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা যা মানুষের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক জীবনেরও প্রতিটি ক্ষেত্রে সৌন্দর্য ও শালীনতার শিক্ষা দেয়। একজন প্রকৃত মুমিনের যে কোনো আচার-আচরণেই ফুটে ওঠা উচিত ইমানের সৌন্দর্য। রাস্তা, বাজার, বাস, ট্রেন, মসজিদ—প্রতিটি জায়গায় একজন মুমিনের আচরণ হতে হবে নম্র, মার্জিত ও দায়িত্বশীল। মুমিন যে সমাজে বসবাস করে, সে সমাজে তার আচরণ এমন হওয়া উচিত যেন মানুষ তার দ্বারা কষ্ট না পায়, বরং তার ব্যবহার দেখে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। ইসলাম শিখিয়েছে, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক এবং সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সহায়ক কাজগুলোও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দাও, এটি সদকা। (সুনানে আবি দাউদ: ১২৮৫) রাস্তার হক রাস্তা সবার জন্য। রাস্তায় অন্যের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা, ময়লা ফেলা, শব্দদূষণ করা মুমিনের কাজ নয়। ইসলাম শিখিয়েছে রাস্তারও হক বা অধিকার আছে। নবীজি (সা.) বলেন, রাস্তায় থাকলে রাস্তার হকগুলো আদায় করুন। রাস্তার হক হলো, দৃষ্টি সংযত রাখা, কষ্টদায়ক জিনিস সরানো, সালামের উত্তর দেওয়া, ভালো কাজে
মুফতি ইফতেখারুল হক হাসনাইন
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা যা মানুষের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক জীবনেরও প্রতিটি ক্ষেত্রে সৌন্দর্য ও শালীনতার শিক্ষা দেয়। একজন প্রকৃত মুমিনের যে কোনো আচার-আচরণেই ফুটে ওঠা উচিত ইমানের সৌন্দর্য। রাস্তা, বাজার, বাস, ট্রেন, মসজিদ—প্রতিটি জায়গায় একজন মুমিনের আচরণ হতে হবে নম্র, মার্জিত ও দায়িত্বশীল। মুমিন যে সমাজে বসবাস করে, সে সমাজে তার আচরণ এমন হওয়া উচিত যেন মানুষ তার দ্বারা কষ্ট না পায়, বরং তার ব্যবহার দেখে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
ইসলাম শিখিয়েছে, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক এবং সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সহায়ক কাজগুলোও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দাও, এটি সদকা। (সুনানে আবি দাউদ: ১২৮৫)
রাস্তার হক
রাস্তা সবার জন্য। রাস্তায় অন্যের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা, ময়লা ফেলা, শব্দদূষণ করা মুমিনের কাজ নয়। ইসলাম শিখিয়েছে রাস্তারও হক বা অধিকার আছে। নবীজি (সা.) বলেন, রাস্তায় থাকলে রাস্তার হকগুলো আদায় করুন। রাস্তার হক হলো, দৃষ্টি সংযত রাখা, কষ্টদায়ক জিনিস সরানো, সালামের উত্তর দেওয়া, ভালো কাজে উৎসাহ দেওয়া এবং মন্দ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখা। (সহিহ বুখারি: ২৪৬৫, সহিহ মুসলিম: ২১৬১)
মসজিদে কারো কষ্টের কারণ হবেন না
মসজিদ আল্লাহর ঘর যেখানে অনেক মানুষ আল্লাহর ইবাদতের জন্য সমবেত হয়। তাই মসজিদে ইবাদতের পাশাপাশি শিষ্টাচার বজায় রাখার নির্দেশনাও দেয় ইসলাম। মসজিদে অযথা উচ্চস্বরে কথা বলা, অন্যকে কষ্ট দেওয়া, জায়গা দখল করা ইত্যাদি ইসলামের শিক্ষার বিপরীত কাজ। মসজিদে এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাজার ও গণপরিবহনে ন্যায় ও সুন্দর আচরণ
বাজারে অথবা গণপরিবহনেও একজন মুমিনের আচরণ হতে হবে ভদ্র ও সংযত। ঠেলাঠেলি না করা, দামাদামিতে ন্যায়পরায়ণতা, বৃদ্ধ, নারী বা অসুস্থ যাত্রীদের জন্য সিট ছেড়ে দেওয়া, ধৈর্য ধারণ করা—এগুলো প্রত্যেকটিই ইবাদতের অংশ।
আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা (ক্রয়-বিক্রয়ের সময়) মানুষের জিনিসপত্র (পণ্য বা দাম) কম দিও না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না। (সুরা শুআরা: ১৮৩)
পাবলিক প্লেসে কথা বলার আদব
পাবলিক প্লেসে কথা বলার সময় শালীনতা রক্ষা করার শিক্ষা দিয়েছে ইসলাম। অনুচ্চ স্বরে কথা বলা, অশ্রাব্য ভাষা এড়িয়ে চলা, অন্যকে বিব্রত না করা—এ গুণগুলো মুমিনের চরিত্রে থাকা উচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি কণ্ঠস্বর নিচু করো। নিঃসন্দেহে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কণ্ঠস্বর হলো গাধার কণ্ঠস্বর। (সুরা লুকমান: ১৯)
একজন মুমিনের ইমান ও তাকওয়া প্রকাশ পায় তার শিষ্টাচার ও সামাজিক আচরণে। রাস্তা, মসজিদ, বাজার, অফিস—সব জায়গায় তার চরিত্রে ইসলামের শিক্ষার সৌন্দর্যের ছাপ থাকা উচিত। তার আচরণের সৌন্দর্য যেন সবার সামনে ইসলামের শিক্ষার সৌন্দর্য তুলে ধরে।
লেখক: মুহাদ্দিস, দারুল উলুম মাকবুলিয়া মাদরাসা, দেবিদ্বার, কুমিল্লা
ওএফএফ
What's Your Reaction?