সিলেটে গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সিটি করপোরেশনের ২৩টি ওয়ার্ডসহ সিলেটের ১৩ উপজেলা কমবেশি বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে হাজারের বেশি গ্রাম। এতে পানিবন্দি রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ।
এদিকে, বৃহস্পতিবার থেকে প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি কমতে শুরু করেছে। শুক্রবারও (২১ জুন) পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত এ দুই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় পাউবোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরে সকাল ৯টায় তা আরও কমে ১৩ দশমিক ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) এ পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।
সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে সকাল ৬টায় ১০ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। পরে সকাল ৯টায় তা আরও কমে ১০ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার এ পয়েন্টে পানি ১১ দশমিক ০৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।
কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে সকাল ৬টায় ১৬ দশমিক ০১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরে সকাল ৯টায় তা আরও কমে ১৫ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার এ পয়েন্টে পানি ১৬ দশমিক ২১ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।
কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৬টায় ১৩ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় তা আরও কমে ১৩ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার এ পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার।
তবে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি কিছুটা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার এ পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শুক্রবার সকাল ৬টায়ও একই মাত্রায় প্রবাহিত হয়। কিন্তু সকাল ৯টায় এক পয়েন্ট বেড়ে ১০ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার।
একইভাবে তবে কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে বৃহস্পতিবার ৮ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। শুক্রবার সকাল ৬টায়ও তা বেড়ে ৮ দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অবশ্য সকাল ৯টা ফের কমতে শুরু করে। এসময় পানি ৮ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।
এছাড়া লোভা, সারি, ডাউকি, সারিগোয়াইন ও ধলাই নদীর পানি আরও কমেছে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় লোভা নদীর পানি ১৩ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার এ নদীর পানি ১৩ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।
সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ১১ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডাউকি নদীর পানি জাফলং পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ১০ দশমিক ৬৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।
সারিগোয়াইন নদীর পানি গোযাইনঘাট পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ১০ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ধলাই নদীর পানি ইসলামপুর পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৭৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ১০ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।
আহমেদ জামিল/এএইচ/এমএস