৯ পারা কোরআন মুখস্তের পরই ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয় রাফিউজ্জামান নিশাত (১২)। এখন তার পড়াশোনা বন্ধ। প্রথম দফায় চিকিৎসা করাতেই সর্বস্বান্ত তার পরিবার। দ্বিতীয় দফায় তাই ছেলের জন্য সাহায্যের হাত পেতেছেন তারা। সুস্থ হয়ে বাকি কোরআনে হাফেজ হতে চায় নিশাত।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের মধ্যকাদমা গ্রামের আব্দুল জলিল ও নুরুন্নাহার বেগমের ছেলে রাফিউজ্জামান নিশাত। এই দম্পতির দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ঢাকায় পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। ছোট ছেলে রাফিউজ্জামান নিশাত মাদরাসায় পড়াশোনা করার পর ৯ পারার কোরআনের হাফেজ হয়। কিন্তু এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ে। নিশাত ওই এলাকার মধ্য কাদমা মারকাজুল উলুস হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, ২০১৮ প্রথম ধরা পড়ে ব্রেন টিউমার। অতি কষ্টে জায়গা জমি বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করে অপারেশন করান নিশাতের বাবা-মা। কিন্তু পরে আবারো অসুস্থ হলে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে চিকিৎসক জানান দ্বিতীয় দফায় ব্রেন টিউমারের কথা। আরও জানান দ্রুত অপারেশন করতে হবে। কিন্তু হতদরিদ্র বাবা-মায়ের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয় আবারো তার অপারেশনের ব্যয়ভার বহন করা। ছেলের চিকিৎসা করাতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন বাবা। সম্পদ বলতে ভিটা জমি ছাড়া কিছুই নেই তার পরিবারের।
অসুস্থ রাফিউজ্জামান নিশাত জানায়, অপারেশন করার পর আবারো ব্রেন টিউমার দেখা দিয়েছে। চোখে ঝাপসা দেখি, কানে কম শুনি। তাই মাদরাসায় পড়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমার বাবা-মা খুবই গরিব। চিকিৎসক আবারো অপারেশন করতে বলছেন। আমি বর্তমানে ৯ পারা কোরআনের হাফেজ। খুব ইচ্ছা সুস্থ হয়ে কোরআন মুখস্থ করবো। আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন।
নিশাতের মা নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ইচ্ছা ছিল ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানাবো, কিন্তু ছেলের অসুস্থতায় সব আশা শেষ হয়ে গেছে। তাই সমাজের মানুষের কাছে হাত পেতেছি ছেলের চিকিৎসার জন্য।
বাবা আব্দুল জলিল বলেন, প্রথমবার ব্রেন টিউমার অপারেশন করে আমার জায়গা জমি সব বিক্রি করে ফেলেছি। দ্বিতীয়বার ছেলের অপারেশন করা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। তাই সমাজের বিত্তবান মানুষ এগিয়ে এলে আমার ছেলেটাকে বাঁচাতে পারবো।
ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, ছেলের চিকিৎসা করতে আব্দুল জলিল নিঃস্ব হয়ে গেছেন। যে সম্পদ ছিল তা বিক্রি করেছেন। দ্বিতীয়বার অপারেশন করার মতো কোনো সামর্থ্য নেই তার। তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।
রবিউল হাসান/এফএ/এমএস