রাজশাহীর বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সবজির দাম। কাঁচা মরিচও ছাড়িয়েছে ১০০ টাকা কেজি। বেড়েছে মুরগি দামও। তবে চালের দামও আগের মতোই আছে। তবে কমেছে ডিমের দাম।
শনিবার (৫ জুলাই) রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষায় সবজির ফলন কমে গেছে। বৃষ্টির কারণে সরবরাহও কমে গেছে। এজন্য দাম বেশি।
বাজারে গত সপ্তাহে বেগুন কেজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও শনিবার ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া ৭০ টাকার টমেটো ৮০ টাকা, ৬০ টাকার করলা ৮০ টাকা, ৫০ টাকার পটোল ৬০ টাকা, ৪৫ টাকার ঝিঙে, ধুন্দল ও ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকায় ঠেকেছে। শসা ৮০-১০০, কাঁচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
৫০ টাকার কচুর মুখী ৮০ টাকা, ৭০ টাকার কাকরোল ৮০-৯০ টাকা, ৯০ টাকার সজনে ডাঁটা ১০০ টাকা, ৪০ টাকার কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচাকলা ৩৫-৪০ টাকা হালি, লাউ ও চাল কুমড়া পিস ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা কেজি, বরবটি ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে সব ধরনের শাকের দামও বেড়ে গেছে। ৩০ টাকার পুঁইশাক কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। ১৫ টাকার লালশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা আঁটি। তবে আগের মতো লেবুর হালি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি। দেশি আদা ১২০-১৩০ টাকা, আমদানি করা আদা ১৮০-২০০ টাকা, দেশি রসুন ১৪০-১৬০ টাকা, আমদানি করা রসুন ১৮০-২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সাহেববাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুল আলিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। আমাদেরও বেশি দামে কিনে এনে বিক্রি করতে হচ্ছে। আড়তদাররা না ছাড়লে আমরাও কিনতে পাচ্ছি না।’
সাদিয়া সুলতানা নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘গত সপ্তাহে প্রতিটি সবজির দাম ছিল নাগালের মধ্যে। এই সপ্তাহে কী এমন হলো যে সবজির দাম বেড়ে গেলো! চালের দামও বেড়ে গেছে। এগুলো তো দেখার কেউ নেই।’
অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা কেজি। অথচ গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৬০ টাকায়। সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০ টাকা কেজি দরে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাদা ডিম হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০- ৩২ টাকায় আর লাল ডিমি ৩৮-৪০ টাকা হালি।
বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও বাজারে মাছের সরবরাহ কম। বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। ট্যাংরা ও চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকার কমে মিলছে না। তবে আকারভেদে চাষের রুই, কাতলা ৩০০-৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৫০০, চিংড়ি ৫০০-৮০০, তেলাপিয়া ও পাঙাশ ২২০ এবং কাঁচকি মাছ ৪০০-৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মৌসুম শুরু হলেও বাজারে ইলিশ অতি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম একেবারে নাগালের বাইরে চলে গেছে। এককেজি ওজনের ইলিশ ২২০০-২৪০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০-১২০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের পর মিনিকেট ও আটাশ চালের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যায়। মনজুর, রশিদ, সাগরসহ অন্যান্য কোম্পানির মিনিকেট চালের দাম বেড়ে ৮০ টাকা কেজি ঠেকেছে। ডায়মন্ড, হরিণ, মোজাম্মেল কোম্পানির চাল আরও বেশি দামে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটাশ চালের দামও বেড়ে ৬২-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চাল আগের মতোই ৫২-৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সাহেব বাজারের চাল বিক্রেতা মাসুদ রানা জাগো নিউজকে বলেন, এই সপ্তাহে চালের সরবরাহ কম আছে। গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের চাল এই সপ্তাহে ৩-৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহে সরবরাহ বাড়বে। সরবরাহ বাড়লে বাজারের দাম স্বাভাবিক হবে।
সাখাওয়াত হোসেন/এসআর/এএসএম