রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ছয়জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ সালাম।
রোববার (৪ আগস্ট) তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মজর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অন্যদিকে সেতু ভবনের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো পূর্বক সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক তাদের তিনদিনের দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ২৮ জুলাই মেট্রোরেল পোড়ানোর মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম শুনানি শেষে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই প্রতিদিনের মতো সেতু ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথারীতি অফিসের কার্যক্রম করতে থাকেন। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জন আসামি কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতা করার লক্ষ্যে বেআইনি জনতাবদ্ধে আবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের অফিসের সামনে এসে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
সেতু ভবনের সিনিয়র সচিবসহ কর্মকর্তাদের পদপদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুঁজি করে হুমকি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক ভীতি সৃষ্টি করে সেতু ভবন লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামিরা আমাদের অফিসের মূল ফটক ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে সেতু ভবনের নিচতলায় ভবনের সামনে রক্ষিত জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, নিরাপত্তা ভবন, সিসি ক্যামেরা, পার্কিং শেড, ক্যানটিন, গাড়িচালকদের কক্ষ, আনসার শেড, মুজিব কনার, জেনারেটরস কক্ষসহ মূল ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ঘটায়।
এ সময়ে সেতু ভবনের সিনিয়র সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ সেতু ভবনের ভেতরে থাকা অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মী আসামিদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলে আসামিরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে সেতু ভবনের সিনিয়র সচিব, অন্য অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মীদের এলোপাতাড়ি মারধর করে সাধারণ ও গুরুতর জখম করে।
জেএ/ইএ/এমএস