সেতু সংস্কারে ধীরগতি, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

6 hours ago 4

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ঢুলন্ডি-সিংজুরী আঞ্চলিক সড়কের পেঁচারকান্দা এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুর আকার বৃদ্ধি এবং সংস্কার চলছে ধীরগতিতে। নির্ধারিত সময় পার হলেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ। ফলে বিপাকে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারী তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।

নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় যানবাহন নিয়ে জেলা সদরে যেতে হচ্ছে ২০ কিমি ঘুরে। এতে এলাকার শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষকসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এ সড়কে প্রতিদিন সিংজুরী, পয়লা ও বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে।

অন্যদিকে হেঁটে বিকল্প কাঠের মই দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এ অবস্থায় সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় কাজের ধীরগতি বলে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, অল্পসংখ্যক লোক দিয়ে কোনো রকমে ধীরগতিতে কাজ চলছে। এ ছাড়াও অদক্ষ শিশু শ্রমিক দিয়ে করানো হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সেতুর কাজ।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে পেঁচারকান্দা বাজারসংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর ওপর ১০০ দশমিক ১০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু নদীর উত্তর পার্শ্বের বন্যার ভাঙনে সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক নদীতে বিলীন হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

পরবর্তীতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজ’ প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫.৮ মিটার সেতু আকার বৃদ্ধি ও পুরো সেতু সংস্কারের কাজ হাতে নেয় এলজিএডি। এ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিতু ট্রেডার্স জামালপুর।

গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শুরু হওয়া কাজ ২০২৪ সালের ২০ জুলাইয়ের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫০ ভাগ। এর মধ্যে কাজ এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

স্থানীয়রা জানায়, যাতায়াতের উন্নয়নে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় সমালোচনার মুখে পড়ছে উন্নয়নকাজ। কয়েকদিন পর পর শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে সাইট থেকে চলে যান, আবার শুরু করেন। কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সেতুর  কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিও তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাজের শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ হয়েছে মাত্র অর্ধেক। অল্পসংখ্যক লোক দিয়ে চলছে কাজ। অদক্ষ শিশু শ্রমিক দিয়েও করানো হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সেতুর কাজ বলছেন কেউ কেউ।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পিন্টু শাহা কালবেলাকে জানান, জাতীয় নির্বাচন এবং বর্ষার কারণে কাজ শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহিনুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, আমি ঘিওরে নতুন জয়েন করেছি। বর্তমানে সেতুর কাজ চলমান রয়েছে বলে জেনেছি। শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে প্রায়ের মধ্যে ৫০ ভাগ কাজ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এ কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ বাস্তবায়নের জন্য তাগিদ দেওয়া হবে।

Read Entire Article