মো. আসাদুল্লাহর বয়স ৭০ অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে ৩০ বছর ধরেই কৃষক হিসেবে যুক্ত আছেন। প্রতি বছর বিভিন্ন মৌসুমি শাক-সবজি চাষ করেন। এবারও নিজের ৩টি জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। অতিরিক্ত লাভের আশায় নিয়মিত যত্ন নিচ্ছেন। তার বিশ্বাস এবারও লাভবান হবেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের হামছাদী এলাকার বাসিন্দা মো. আসাদুল্লাহ। কৃষিকাজ করেই তিনি স্বাবলম্বী। বৃদ্ধ বয়সে এখনো পরিবারের হাল ধরে আছেন। নিজের ৩টি ক্ষেতে এবার ৩ হাজার ফুলকপি চাষ করেছেন। যা আগামী মাসের মধ্যে উত্তোলন করে বাজারে তুলতে পারবেন।
এই কৃষক জানান, ৩ হাজার পিস চারার প্রত্যেকটিতে ১০-১২ টাকা করে ব্যয় হয়েছে। চারা রোপণে এখন পর্যন্ত মোট ৩৫-৩৬ হাজার টাকা খরচ করেছেন। হয়তো আরও কিছু টাকা খরচ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। রোপণের দেড় মাস পরই উত্তোলন করা হয় এ সবজি। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ২০ দিনের মধ্যে ফুলকপি তুলতে পারবেন।
তার মতে, প্রায় ৭০-৭৫ হাজার টাকা মূল্যে রোপণ করা সবজি বিক্রি করা সম্ভব। বিগত দিনেও তিনি প্রায় ৪০ শতাংশ লাভ করে আসছিলেন। এ বছর ফুলকপি ক্ষেতে জৈব, টিএসপি আর গোবর সার প্রয়োগ করেন। তিনদিন পর পর ফুলকপি চারায় পানি দেন। এ সবজি মূলত আশ্বিন মাসের প্রথমদিকে রোপণ করা হয়। উৎপাদিত ফসল ভাদ্র মাসে উত্তোলন করে থাকেন।
তার সহযোগী শাহজাহানের দেখভালে এখন পর্যন্ত ভালো ফলনের দেখা পেয়েছেন। তবে প্রতি বছরই ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার চারার মধ্যে অন্তত ৩০০-৪০০ চারা বাদ যায়। এতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। নিয়মিত কাজ করা শাহজাহান বলেন, ‘এবার ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে। এবারও ভালো লাভবান হবো। এখন পর্যন্ত আবাদের তেমন কোনো চারা বাদ যায়নি। সে ক্ষেত্রে অল্প কিছু চারা বাদ পড়লেও প্রভাব পড়বে না।’
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘বর্তমানে সোনারগাঁয়ে ৯ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা চাষাবাদ করছেন। আমরা নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা শুধু ফুলকপি চাষির সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবি না। সব কৃষিপণ্য চাষিদের সেবা দিতে হয়। তবে রোগবালাইমুক্ত চাষাবাদের পাশাপাশি ভালো ফলন পাওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি।’
এসইউ/জিকেএস